খুলনার ডুমুরিয়ায় এক নারীকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় সহযোগিতা করার অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তার সহযোগী এমরান হোসেন গাজীকেও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এ মামলায়।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক রাকিবুল ইসলাম তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে এজলাসে নেওয়ার জন্য প্রিজন ভ্যান থেকে নামানোর সময় নারায়ন চন্দ্রকে লক্ষ্য করে ডিম ও ইট নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে তার ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন ও মিছিল করেন তারা।
আদালত সূত্র জানায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহম্মেদ। গত ২৭ জানুয়ারি রাতে ওই নারীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরেরদিন হাসপাতালের ওসিসির (ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) সামনে থেকে কয়েকজন লোক তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান।
অভিযুক্তরা সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দের ঘনিষ্ঠ সহচর ও অনুসারী। তাদের বাঁচাতে তৎকালীন মন্ত্রী অবৈধ প্রভাব বিস্তার করায় চিকিৎসা শেষ হওয়ার আগেই হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয় ভুক্তভোগীকে। এরপর তাকে বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে মিথ্যা বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়।
ওই ঘটনায় ভুক্তভোগীর খালাতো ভাই পরিচয়দানকারী গোলাম রসুল বাদী হয়ে গত ৯ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ করেন।
পরে আদালত ঘটনাটি তদন্ত করে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাকে মামলা রুজু করার নির্দেশ দিলে গত ১৭ অক্টোবর ডুমুরিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহম্মেদসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান নারায়ন চন্দ্র চন্দ ওই মামলার ২ নম্বর আসামি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম জানান, আদালতে নেওয়ার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী ও ক্ষুব্ধ জনতা নারায়ন চন্দ্র চন্দের ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন। কয়েকটি ডিম তার গায়ে লেগে জামা নষ্ট হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় বাদী এতদিন বিচার পাননি। তবে দেশে বর্তমানে আইনের শাসন কায়েম হওয়ায় নির্যাতিত নারী সঠিক বিচার পাবেন বলে আশা করছি।
আলমগীর হান্নান/এসআর/জেআইএম