সাবেক মন্ত্রীর ‘ভাগনার’ দাপট, ৬ বছরেও শেষনি দেড় বছরের কাজ

4 hours ago 6

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ছয় বছর আগে। তবে কাজ এখনো শেষ হয়নি। কবে শেষ হবে তারও নিশ্চয়তা নেই। অথচ দেশের বিভিন্ন জেলায় একই সময়ে শুরু হওয়া ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯১টিরই নির্মাণ শেষ হয়েছে।

সুনামগঞ্জ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরে দোয়ারা-ভোগলাবাজার সড়কের (সাইটিং ঘাটে) পাশে দুই একর জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে কলেজ ভবন। সেখানে শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য নির্মাণ করার কথা পাঁচতলা একাডেমিক ভবন, চারতলা অফিস ভবন, চার কক্ষবিশিষ্ট সার্ভিস স্টেশনসহ একাধিক স্থাপনা।

প্রায় ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দের কাজটি যৌথভাবে পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহের মেসার্স ভাওয়াল কনস্ট্রাকশন-ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বরিশালের এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। তবে ওই দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চুক্তিতে কাজটি নেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মাহতাবুল হাসান সবুজ। ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট শুরু করা কাজটি ২০২০ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের ছয় বছর পরও শেষ হয়নি। এখনো প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে।

উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘ঠিকাদার নাকি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীর ভাগনা। সেজন্য কেউ ঠিকাদারকে সঠিক সময়ে কাজ করার জন্য চাপ দেননি। এখানে ঠিকাদারের গাফিলতির পাশাপাশি প্রশাসনেরও গাফিলতি রয়েছে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা আইনজীবী জমির উদ্দিন বাবুল বলেন, ‘একটি কলেজ নির্মাণ করতে ছয় বছর লাগিয়েছেন ঠিকাদার অথচ স্থানীয় প্রশাসন নীরব। আইন সবার জন্য সমান, সে মন্ত্রীর ভাগনা হোক আর প্রশাসনের কেউ হোক।’

এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার মাহতাবুল হাসান সমুজকে একাধিকবার কল দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

কথা হয় দোয়ারাবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী এ এস এম নাঈমের সঙ্গে। তিনি বলেন, গতবছরের জানুয়ারির শুরুতে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম বছর ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ৫৬০ শিক্ষার্থী ভর্তির কথা থাকলেও শ্রেণিকক্ষ সংকটে ভর্তি করা হয় মাত্র ১৮৬ জনকে। কাজ দ্রুত শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করতে ঠিকাদারকে তাগিদ দিয়েছি। দু-একমাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদী।

লিপসন আহমেদ/এসআর/জেআইএম

Read Entire Article