মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
শরৎকালের এক অনবদ্য ভালো লাগা কাশফুল। তুলোর মতো ভেসে বেড়ানো কাশফুল। মনকে ভালো লাগায় ভরিয়ে তোলে। অন্যরকম এক জগতে নিয়ে যায়। শরতের এই মেঘ, এই রোদের কানামাছি খেলা কার না ভালো লাগে? শরৎ মানেই নদীর তীরে কাশফুলের সারি। নদীর তীরে লম্বা কাশফুলগুলো বাতাসে নুইয়ে পড়ে যেন ডাকছে সবাইকে।
বলা যায়, শরৎকাল বিখ্যাত কাশফুলের জন্যই। যান্ত্রিক এই জীবনে একটুখানি দম নেওয়ার জন্য মানুষ হারিয়ে যেতে চায়। বিশেষ করে কাশফুলের মাঝে। কাশফুল মূলত ছনগোত্রীয় এক ধরনের বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। রোমানিয়া আদিবাসী কাশফুলের বৈজ্ঞানিক নাম স্যাকারাম স্পন্টেনিয়াম।
কাশফুল উদ্ভিদটি উচ্চতায় সাধারণত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনা রুক্ষ্ম এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই এদের বেশি জন্মাতে দেখা যায়। ঢাকার মধ্যে অনেক জায়গায় শরৎকালে কাশফুলের অপূর্ব সমারোহ দেখা যায়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে কাশফুলের উপস্থিতি বেশি দেখতে পাওয়া যায়।
সারিঘাট
কেরানীগঞ্জের সারিঘাট। বর্তমানে ঢাকা শহরের একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে সারিঘাট। প্রচুর মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন। গ্রামের ভাবটা এখানে আছে। ছোট খাল আছে। নৌকায় চরে ঘুরে বেড়ানো যাবে। দেখা মিলবে খোলা মাঠের। যেখানে এলাকার ছেলেমেয়েরা ফুটবল খেলে।
আরও পড়ুন
টাঙ্গুয়ার হাওরের জলে ভেসে ভেসে
ঘোড়ার ‘রিমান্ড’ দেখতে যেতে পারেন তুলসীপুরে
সারিঘাটে ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ কাশবন। কাশফুলের টানেও এখানে অনেকে আসেন। কোলাহলমুক্ত পরিবেশে নানা রকমের পাখি আর উচ্চকণ্ঠের ডাক মনকে ভরিয়ে দেবে। নৌকা ভ্রমণও করতে পারবেন। গোসল করতেও মানা নেই। কায়াকিং করার সুযোগ আছে। কায়াকিং হচ্ছে ভ্রমণ করার জন্য এক ধরনের ছোট নৌকা, যা বৈঠা বা লগি ব্যবহার করে চালানো যায়।
হালকা কিন্তু ব্যালেন্সড নৌকায় কায়াক ক্লাবের নিজস্ব লাইফ জ্যাকেট পরে উঠলে আপনার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হবে বৈঠা। ব্যস, এবার আপনি নিজেই মাঝি! ইচ্ছেমতো ঘুরতে পারবেন পানি দেখতে দেখতে। অনেকে মাছ ধরার জন্য ছিপ, বড়শি ও টোপ নিয়ে সেখানে যান। সারিঘাট এলাকা অনেকটাই নিরাপদ।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার যে কোনো জায়গা থেকে প্রথমে যাত্রাবাড়ী যাবেন। সেখান থেকে বাস বা লেগুনায় জুরাইন রেলগেট। জুরাইন পোস্তগোলা সেতুর নিচে সিএনজি বা অটোরিকশা আছে। সেখানে সিএনজি ড্রাইভারকে বললেই হবে যে সারিঘাটে যাবো। যদি চার-পাঁচজনের টিম হয়, তাহলে সরাসরি সিএনজি ভাড়া নিতে পারেন সারিঘাট পর্যন্ত। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল কিংবা প্রাইভেটকারে যেতে পারেন। পার্কিংয়ের কোনো ঝামেলা নেই। দিতে হবে না পার্কিং ফি।
খাবারের খবর
এখানে পাবেন গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী চাপটি পিঠা। সঙ্গে ১০-১২ রকমের সুস্বাদু ভর্তা, যেমন- শুঁটকি ভর্তা ২-৩ প্রকার, মরিচ ভর্তা, কাঁচা আম ভর্তা, সরিষা ভর্তা, কালিজিরা ভর্তা, পুদিনা পাতা ভর্তা, শুকনো মরিচের সঙ্গে রসুনের ভর্তা, আরও অনেক রকম ভর্তা।
লেখক: অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, সেলস অপারেশন্স, ফেয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড।
এসইউ/এএসএম