তিনি কোনো কোচ নন। একজন ভিনদেশি আম্পায়ার। নাম সায়মন টফেল। অস্ট্রেলিয়ার এই ৫৪ বছর বয়সী আম্পায়ার বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম ‘হাই প্রোফাইল’ আম্পায়ার।
সায়মন টাফেলের নাম শুনেনি, এমন ক্রিকেট অনুরাগী খুব কম। যার নামের পাশে আছে ৮৭টি টেস্ট, ২২১ ওয়ানডে আর ৪২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে সাড়ে তিনশ‘ ম্যাচ কভার করা টফেল ম্যাচ পরিচালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা আম্পায়ার। যার অভিজ্ঞতার ভান্ডারও অনেক সমৃদ্ধ। এই মেধাবী, নামি ও দক্ষ আম্পায়ারের সুনাম, অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে আগ্রহী বিসিবি।
এ অস্ট্রেলিয়ানকে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত। এমন একজন হাই প্রোফাইল ও অভিজ্ঞ আম্পায়ারের সরাসরি সম্পৃক্ততায় বাংলাদেশের তরুণ আম্পায়াররা নিজেদের উন্নত করতে পারবেন। তার কাছ থেকে আম্পায়ারিংয়ের অনেক খুঁটিনাটি ও জটিল বিষয় শিখতেও পারবেন।
সে কথা চিন্তা করে প্রতিটি ক্রিকেট অনুরাগীই বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটি তথা বিসিবির সিদ্ধান্তে স্বাগতঃ জানিয়েছে সবাই। ক্রিকেট অনুরাগীদের কথা, সায়মন টাফেল আম্পায়ারদের ট্রেনিং করানোর জন্য আনার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ভাল ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ; কিন্তু এ উদ্যোগ প্রশংসার বদলে সমালোচিত হয়েছে বেশি। কারণ এক ও অভিন্ন।
জানা যায়, বাংলাদেশের আম্পায়ারদের মান উন্নয়নে বছর জুড়ে কাজ করা বাবদ ২ বছরে বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা (মাসে ২৩ হাজার ডলার করে, বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ২৮ লাখ টাকা করে) চেয়েছেন টাফেল। কেন এ অস্ট্রেলিয়ান আম্পায়ারকে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে আম্পায়ারদের পরামর্শক করে আনা হবে?
তা নিয়ে ক্রিকেট অনুরাগী মহল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমত প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সবার একটাই কথা, তিনিতো আর স্পেশালিস্ট কোনো কোচ নন যে তাকে ২ বছরের জন্য প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিতে হবে। ‘আম্পায়ারদের ট্রেনিং করাতে এত বিরাট অংকের টাকা খরচ করে কি লাভ হবে?’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সমালোচনার কারণেই হোক আর নিজেদের বিলম্বিত উপলব্ধির কারণেই হোক সায়মন টাফেলের সাথে চুক্তি করা থেকে বিরত ছিল বিসিবি এবং বিষয়টি ঠিক ধামা-চাপা না পড়লেও অনেকটাই ঢাকা পড়েছিল; কিন্তু ভেতরের খবর, সায়মন টাফেল ইস্যু আবার সরব হয়েছে। জানা গেছে এ অস্ট্রেলিয়ানের সাথে আবার ২ বছরের জন্য চুক্তি করতে আগ্রহী হয়েছে বিসিবি।
তবে কি অত বড় অংকের টাকায় টফেলকে আনা হবে? ভেতরের খবর, নাহ! বিসিবি আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। অত টাকা না দিয়ে বিসিবি টাফেলকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তিনি দুই বছরের জন্য যে পরিমাণ অর্থ (২ লাখ ৭৫ হাজার ডলার) পারিশ্রমিক দাবি করেছেন, তার অর্ধেক দিতে আগ্রহী বিসিবি। মানে বিসিবির সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে হলে, এখন টাফেল পাবেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ডলার (১ কোটি ৭১ লাখ টাকা)। অর্থাৎ প্রতি মাসে তার বেতন দাঁড়াবে সাড়ে ১১ হাজার ডলার (বাংলাদেশের মুদ্রায় যা নেমে ১৪ লাখ টাকা) পারিশ্রমিক দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বিসিবি।
বিসিবির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, টাফেল সেই অংকে রাজি হলেই হয়ত খুব শিগগিরই দু’পক্ষের মধ্যে রফা হয়ে যাবে। সায়মন টাফেল যদি আগের অবস্থানে অনঢ় থাকেন, তাহলে তার সাথে বোর্ডের চুক্তির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
এআরবি/আইএইচএস