কাঞ্চনজঙ্ঘা ভারতের সিকিম রাজ্য ও নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে অবস্থিত। এটি হিমালয় পর্বতমালার একটি পর্বতশৃঙ্গ। ভারতের উচ্চতম শৃঙ্গ ও বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। এর উচ্চতা প্রায় ৮,৫৮৬ মিটার (২৮,১৬৯ ফুট)। এটি মাউন্ট এভারেস্ট ও কে২-এর পর বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ। হিমালয় পর্বতমালার যে অংশটিতে এই শৃঙ্গ অবস্থিত, তা ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা হিমালয়’ নামে পরিচিত। কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান সিকিম রাজ্যে অবস্থিত এবং এটি ইউনেস্কোর একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।
২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় পঞ্চগড়ের জালাসি এলাকা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা গেছে বলে জানা যায়। তবে হেমন্তের মেঘমুক্ত আকাশে প্রতি ভোরেই তার দেখে মেলে। এমনকি শীত মৌসুমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো পর্যটক ভিড় করেন এই পর্বত দেখার জন্য। আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে দিনের অন্য সময়েও দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা।
অনেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ দেখতে তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলো এলাকায় ভিড় করেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকেরাও সেখানে অবস্থান করেন। মূলত মহানন্দার পাড়ে অবস্থিত তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো থেকে অক্টোবর-নভেম্বর মাসের বেশিরভাগ সময় দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। এ ছাড়া জেলা শহরের করতোয়া সেতুতে দাঁড়ালে বা কোনো উঁচু ভবনের ছাদে দাঁড়িয়েও দেখতে পারবেন। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া যাওয়ার পথেও দেখা মিলবে কাঞ্চনজঙ্ঘার এমন দৃশ্য।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সড়কপথে পঞ্চগড়ে যাওয়া যায়। বেশিরভাগ বাসের শেষ গন্তব্য তেঁতুলিয়া। রেলপথেও যাওয়া যায়। এ ছাড়া নীলফামারীর সৈয়দপুর পর্যন্ত আকাশপথে যাওয়া যায়। সেখান থেকে পঞ্চগড়ে যাওয়া যায় সড়কপথে। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ার দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। বাস বা অন্য যানবাহনে পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া শহরে যাওয়া যায়।
পঞ্চগড় শহরে সার্কিট হাউজ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের গেস্ট হাউজ আছে। এ ছাড়া বেসরকারি গেস্ট হাউজ ও হোটেল আছে। তেঁতুলিয়ায় আছে সরকারি-বেসরকারি হোটেল ও বাংলো। আগে যোগাযোগ করলে ডাকবাংলোয় থাকা যায়। তবে পুলিশের অফিসার্স মেস, উপজেলা পরিষদের কমপ্লেক্স, সড়ক ও জনপদের গেস্ট হাউজ, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের গেস্ট হাউজ, বন বিভাগের গেস্ট হাউজ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের গেস্ট হাউজেও থাকতে পারেন। এ ছাড়া তেঁতুলিয়ায় বেসরকারি হোটেল, গেস্ট হাউজ এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিচালিত কটেজও আছে।
বর্তমানে মেঘমুক্ত আকাশে দু’একবার দেখা মিললেও হেমন্ত ও শীতকালে নিশ্চিত উপভোগ করতে পারবেন কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোরম দৃশ্য। তাই প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন এখনই। ভারতের সিকিম রাজ্যে না গিয়েও দেশে বসেই উপভোগ করতে পারবেন কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য।
এসইউ/এএসএম