ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সীমান্ত পথে আসা অবৈধ অস্ত্র, নকল টাকা, কালো টাকার অনুপ্রবেশ বন্ধের ব্যবস্থা করতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) লিখিত দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কয়েকটি প্রস্তাবনা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে দিয়েছে বিএনপির তিন সদস্য বিশিষ্ঠ এক প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধ দলের নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। প্রতিনিধিদলে ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ জাকারিয়া। এ তিনজন বিএনপির নির্বাচন কমিশন বিষয়ক কমিটির সদস্য।
আরও পড়ুন
নির্বাচনের দিন বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছে বিএনপি
বিতর্কিত কর্মকর্তারা যেন নির্বাচনে না থাকেন: ইসিকে মঈন খান
বিএনপির দেওয়া প্রস্তাবগুলো হলো-
১. লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে চব্বিশের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলসমূহের নেতাকর্মীদের নামে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে দায়েরকৃত মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলাসমূহ নির্বাচনী সময়সূচি জারির পূর্বেই প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বেই বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় বিবেচনায় প্রদত্ত সব অস্ত্র সরকারের কাছে জমা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
৩. সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা অগণিত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের আশু ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানে এবং দূতাবাসগুলোতে চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগ বাতিল করতে হবে।
৫. নির্বাচন অবাধ, বিশ্বাসযোগ্য, শান্তিপূর্ণ ও পক্ষপাতহীন হতে হবে। ভোটারদের স্বাধীন ভোটাধিকার প্রয়োগে সম্ভাব্য সব প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুকূল পরিবেশ ও সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
৬. নির্বাচনে সম্ভাব্য সব কারচুপির সুযোগ প্রতিরোধ করে নিখুঁত ও ত্রুটিমুক্ত ফলাফল নিশ্চিত করতে হবে।
৭. ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগে অর্থশক্তি, পেশিশক্তি ব্যবহার ও প্রভাব প্রতিরোধ করতে হবে।
৮. নির্বাচনী এলাকায় বগিরাগত কোনো লোক নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না।
৯. নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের গৃহীত সাংবিধানিক শপথের প্রতি অনুগত থেকে নিরপেক্ষ ও সাহসী হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সংবিধান ও আইনের প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগে নির্ভীক হতে হবে।
১০. নির্বাচন যে অবাধ, নিরপেক্ষ ও কারচুপিমুক্ত হচ্ছে তা দেশ ও জাতির কাছে দৃশ্যমান হতে হবে।
১১. ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
১২. কোনো রাজনৈতিক দল, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কর্তৃক বির্তক তৈরি করে এমন কোন বক্তব্য যেন না দেয় তার পূর্ব প্রস্তুতি থাকতে হবে।
১৩. নির্বাচনে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ায়- এমন সব অপপ্রচার রোধ করতে হবে।
১৪. ভোটারদের প্রভাবিত করে এরূপ ধর্মীয় প্রলোভন বা ধর্মীয় দণ্ড প্রদানের ভীতি প্রদর্শন রোধ করতে হবে।
১৫. ভোটকেন্দ্র নির্ধারণে বিধি-বিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভোটকেন্দ্রকে ভোটারদের কাছাকাছি নিয়ে যেতে হবে। যতদূর সম্ভব কম সংখ্যক ভোটার নিয়ে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করাই উত্তম। এতে কম দূরত্ব অতিক্রম করে ভোটাররা সহজেই ভোটকেন্দ্রে ভোটদানে উৎসাহিত হবেন।
এমওএস/এএমএ/জেআইএম