সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ কার্যকর হলে যা হবে
আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড: আসিফ নজরুল বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ার পর নিম্ন আদালতের বিচারকদের যে নিয়ন্ত্রণ (নিম্ন আদালতের বিচারকদের পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, শৃঙ্খলাজনিত বিষয়াদি, ছুটি সংক্রান্ত বিষয়াদি এমনকি নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী নির্ধারণ) — সব কিছু সুপ্রিম কোর্টের সচিবালয় করবে। আইন মন্ত্রণালয় যেটা করতো, সেটা সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের হাতে চলে যাবে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আইন উপদেষ্টা বলেন, নিম্ন আদালতের যে নিয়ন্ত্রণ বা শৃঙ্খলা বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত। রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত মানে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আইন মন্ত্রণালয় কাজটি করে থাকে। প্রায়োগিকভাবে নিম্ন আদালতের বিচারকদের যে শৃঙ্খলা এবং নিয়ন্ত্রণের বিধানগুলো রয়েছে, তা সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে আইন মন্ত্রণালয় করে থাকে। তিনি বলেন, সচিবালয় প্রতিষ্ঠা হলে শুধু বিচারকার্যে নিয়োজিত যারা আছেন সেই বিচ
আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড: আসিফ নজরুল বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ার পর নিম্ন আদালতের বিচারকদের যে নিয়ন্ত্রণ (নিম্ন আদালতের বিচারকদের পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, শৃঙ্খলাজনিত বিষয়াদি, ছুটি সংক্রান্ত বিষয়াদি এমনকি নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী নির্ধারণ) — সব কিছু সুপ্রিম কোর্টের সচিবালয় করবে। আইন মন্ত্রণালয় যেটা করতো, সেটা সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের হাতে চলে যাবে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, নিম্ন আদালতের যে নিয়ন্ত্রণ বা শৃঙ্খলা বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত। রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত মানে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আইন মন্ত্রণালয় কাজটি করে থাকে। প্রায়োগিকভাবে নিম্ন আদালতের বিচারকদের যে শৃঙ্খলা এবং নিয়ন্ত্রণের বিধানগুলো রয়েছে, তা সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে আইন মন্ত্রণালয় করে থাকে।
তিনি বলেন, সচিবালয় প্রতিষ্ঠা হলে শুধু বিচারকার্যে নিয়োজিত যারা আছেন সেই বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা এবং ছুটির বিষয়াদি সুপ্রিম কোর্টের সচিবালয়ের হাতে চলে যাবে।
কিন্তু বিচার বিভাগে যারা কাজ করেন এবং বিচারক হিসেবে অন্য কোথাও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন (যেমন- নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, আইন কমিশন) — এ ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা অর্থাৎ নিম্ন আদালতের বিচারকরা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রণালয়ের মধ্যেও এরা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা নিম্ন আদালতের বিচারকদের কাজের শৃঙ্খলা ও ছুটির বিষয়াদি আইন মন্ত্রণালয়ের হাতেই থাকবে।
শুধু নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধান, শৃঙ্খলা ও ছুটিজনিত বিষয়াদি উচ্চ আদালতের হাতে চলে যাবে। উচ্চ আদালত তার সচিবালয়ের মাধ্যমে এ ক্ষমতা প্রয়োগ করবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নিম্ন আদালতে যারা বিচারক থাকতেন তাদের আইন মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করতো। আইন মন্ত্রণালয়ের ইচ্ছায় নিম্ন আদালতের বিচারকরা জামিন দেবেন কি দেবেন না, সাজা দেবেন কি দেবেন না — এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতেন। এ ধরনের অনেক অভিযোগ আমরা শুনতাম ও এমন অনেক কিছু দেখতাম। এ অধ্যাদেশ পরিপূর্ণভাবে কার্যকর হওয়ার পর নিম্ন আদালতের বিচারকদের উপর আইন মন্ত্রণালয় তথা সরকারের আর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। সম্পূর্ণভাবে উচ্চ আদালত তার সচিবালয়ের মাধ্যমে বিষয়গুলো দেখাশোনা করবে। তবে এটা এই মুহূর্তে এখনই কার্যকর হচ্ছে না। কারণ সচিবালয়টি প্রতিষ্ঠা করতে হবে, একে ফাংশনাল করতে হবে।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, সচিবালয় সম্পূর্ণ কার্যকর হওয়ার পর সরকার সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে অধস্তন আদালতের বিচারকদের ওপর তত্ত্বাবধান, নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলার বিষয়াদি উচ্চ আদালতের হাতে ন্যস্ত করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি উচ্চ আদালতের সচিবালয় কয়েক মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ কার্যকর হয়ে যাবে। এরপর থেকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধান, শৃঙ্খলা ও ছুটির বিষয়াদি সম্পূর্ণরূপে উচ্চ আদালতের সচিবালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। সরকারের আর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
এমইউ/কেএএ/
What's Your Reaction?