সূর্য পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে মানুষ!

17 hours ago 8

সূর্যজয়, শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এবার নতুন এক দিগন্তে পৌঁছতে যাচ্ছে মানবজাতি। এখন থেকে বহু বছর আগে চাঁদমামার বাড়িতে পা রাখলেও সূয্যিমামা এখনো অধরা মানুষের কাছে। সৌরজগতের নানা রহস্য উন্মোচনে মত্ত মানুষ এবার লক্ষ্য নিয়েছে সূর্য অভিযানের, আর এ জন্য চলছিল নিরলস গবেষণা। অবশেষে সূর্যের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে যাচ্ছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার একটি মহাকাশযান। 

বলা হচ্ছে, নাসার তৈরি ‘পার্কার সোলার প্রোব’ মহাকাশযানকে সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছানোর মিশনে পাঠানো হয়েছে। এটি সূর্যের বাইরের বায়ুমণ্ডল, যাকে ‘করোনা’ বলা হয়, সেখানে প্রবেশ করবে। এই অভিযানের মাধ্যমে সূর্যের কার্যকলাপ এবং সৌরজগতের অজানা তথ্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।

এই মিশনে পার্কার সোলার প্রোবকে চরম উচ্চ তাপমাত্রা এবং ভয়াবহ বিকিরণের মুখোমুখি হতে হবে। মহাকাশযানটির চারপাশে দেওয়া হয়েছে বিশেষ কার্বন যৌগের আবরণ, যা ১,৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহ্য করতে সক্ষম। তবে অভিযান চলাকালে কয়েক দিন ধরে এটি পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ২৭ ডিসেম্বরের দিকে বিজ্ঞানীরা এর থেকে সংকেত পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। এটি টিকে আছে কি না, তা ওই সংকেতের মাধ্যমেই জানা যাবে।

২০১৮ সালে উৎক্ষেপিত পার্কার সোলার প্রোবের আগে ২১ বার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেছে। এবার এটি সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৩৮ লাখ মাইল দূরত্বে গিয়ে নতুন রেকর্ড গড়তে চলেছে। ঘণ্টায় ৪ লাখ ৩০ হাজার মাইল গতিতে চলতে সক্ষম মহাকাশযানটি এখন পর্যন্ত তৈরি করা মানবসৃষ্ট যে কোনো বস্তুর তুলনায় দ্রুতগামী।

বিজ্ঞানীদের মতে, এ অভিযান সূর্যের বাইরের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে বহু অজানা তথ্য সরবরাহ করবে। বিশেষ করে করোনার তাপমাত্রা কেন এত বেশি, সে রহস্য উন্মোচিত হতে পারে। এ ছাড়া সৌর বায়ু, যা চার্জযুক্ত কণারপ্রবাহ হিসেবে নির্গত হয় এবং পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ায় মেরুজ্যোতির সৃষ্টি করে, তা আরও ভালোভাবে বোঝা যাবে।

সূর্যের গোপন রহস্য উদ্ঘাটনে পার্কার সোলার প্রোবের এই মিশন বিজ্ঞানীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ তথ্য মহাকাশ আবহাওয়া, সৌরবায়ুর প্রভাব এবং পৃথিবীর বৈদ্যুতিক ও যোগাযোগব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ওয়েলসের ফিফথ স্টার ল্যাবসের মহাকাশ গবেষক জেনিফার মিলার্ড জানান, ‘সূর্য ও এর কার্যকলাপ বুঝতে পারা পৃথিবীর যোগাযোগব্যবস্থা এবং দৈনন্দিন জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Read Entire Article