খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বলেছেন, চারুকলা স্কুলের তিনটি ডিসিপ্লিনে নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীলতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতার মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করছে। তাদের সৃষ্টিশীল কাজই সফলতার সাক্ষ্য বহন করে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে চার দিনব্যাপী বিশেষ শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে। চারুকলা স্কুলের আঙিনায় এ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, সংকট ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তারা ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমি আশা করি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা দেশবরেণ্য শিল্পী হয়ে আমাদের গৌরবান্বিত করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান। তিনি বলেন, শিল্প মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। শিল্পচর্চা শুধু নান্দনিক আনন্দ নয়, এটি সমাজ ও জাতির মানসিক বিকাশের অন্যতম মাধ্যম। বিজ্ঞান মানুষের জীবনকে সহজ করে, আর শিল্প তাকে করে সুন্দর ও পরিপূর্ণ। তাই দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে বিজ্ঞানের পাশাপাশি শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশও সমানভাবে প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী। তিনি বলেন, শিল্প মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে, মন ও সমাজে পরিবর্তন আনে। শিল্পের মাধ্যমে মানুষের ভাবনা, সময় ও জীবন প্রভাবিত হয়। এটি মানুষকে সংবেদনশীল, মানবিক ও উদার হতে শেখায়। তাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক সাফল্যের পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতেও সম্পৃক্ততা রাখলে সামগ্রিকভাবে তারা পরিণত নাগরিক হয়ে উঠবে।
ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিন প্রধান ড. মো. তরিকত ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন চারুকলা স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শেখ সিরাজুল হাকিম ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো নাজমুস সাদাত, ডিসিপ্লিনের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুব-ই-খুদা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাঁশি বাজিয়ে মনোমুগ্ধকর আবহ সৃষ্টি করেন ডিসিপ্লিনের অ্যালামনাই তপু দাস। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিসিপ্লিনের ২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী অর্পণ রায় ও ফারিহা তাসনিম।
অনুষ্ঠানে ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মো. সাইফুল্লাহ আবিরকে ‘শিল্পী শশিভূষণ পাল গ্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। এ ছাড়া ডিসিপ্লিনের ব্যাচেলর ও মাস্টার্স প্রতিটি সেমিস্টার থেকে দুজন কৃতী শিক্ষার্থীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
পরে উপাচার্য শিল্পী শশিভূষণ পাল আর্ট গ্যালারিতে ফিতা কেটে ৪ দিনব্যাপী শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে তিনি প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া শিল্পকর্মগুলো ঘুরে দেখেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রদর্শনী আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত (প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা) অনুষ্ঠিত হবে। এবারের প্রদর্শনীতে ৯৫ শিক্ষার্থীর ১২০টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে।