সেই কনস্টেবলের রিমান্ড নামঞ্জুর

2 weeks ago 8

সহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ কনস্টেবল সাফিউর রহমানের রিমান্ড নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ড শুনানিতে উভয়পক্ষ বিয়েতে সম্মত হওয়ায় তার রিমান্ড চেয়ে করা আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।

আজ থেকে এক বছর আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ কনস্টেবল সাফিউর রহমান (৩০)। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে ব্যারাকে নারী সহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। মামলা দায়েরের পর ২২ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে ঢাকার মিল ব্যারাক পুলিশ লাইন্স থেকে তাকে গ্রেফতার করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।

শনিবার (২৩ আগস্ট) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই জুলফিকার আলী তার পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। তবে রিমান্ড শুনানির জন্য আজ (রোববার) দিন ধার্য করা হয়। এদিন আসামিকে কারাগার থেকে ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাজুল ইসলাম সোহাগের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করা ভুক্তভোগী নারী পুলিশ সদস্য এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। উভয়পক্ষ জানায়, তারা ১৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন। ভুক্তভোগী বাদী আদালতকে বলেন, আমরা বিয়ে করতে সম্মত হয়েছি। তাই আসামির রিমান্ড নামঞ্জুর করে জামিন দিলে কোনো আপত্তি থাকবে না।

এ সময়, আসামির রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী আব্দুস ছালাম সিকদার। পরে আদালত আসামির রিমান্ড নামঞ্জুর করেন। তবে বিয়ে সম্পন্ন না হওয়ায় এখনই জামিনের আদেশ দেননি বলে নিশ্চিত করেন আসামিপক্ষের এ আইনজীবী। তিনি বলেন, আমরা বিয়ে আয়োজনের জন্য উচ্চ আদালতে একটা আবেদন করবো। তারপর আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী দ্রুত বিয়ে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করবো।

এর আগে শনিবার ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সালেহ'র আদালতে রিমান্ড শুনানির জন্য আসামিকে হাজির করা হয়। এদিন সাফিউরের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

আদালত তার কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চান। তাকে সামনে আসতে বলেন। পরে সামনে দাঁড়িয়ে সাফিউর আদালতকে জানান, তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তিনি তাকে বিয়ে করবেন।

আগে বিয়ে করেছেন কি না আদালত জানতে চাইলে আসামি জানান, গ্রামের বাড়িতে তার স্ত্রী আছে। এক বছর আগে বিয়ে করেছেন।

বউ রেখে আরেকজনের সঙ্গে প্রেম করেন কেন? বিচারকের এই প্রশ্নের জবাবে সাফিউর ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক তাকে বিয়ে করবেন বলে জানান।

এ সময় আদালত তাকে বলেন, সে (ভিকটিম) তো মামলা দিয়েছে। ওই মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে মামলার সমাধান করতে পরামর্শ দেন আদালত। তাকে বলেন, বউ রেখে আরেক নারীর দিকে চোখ যায় কীভাবে?

এদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তার উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করে আদালত সাফিউরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ধর্ষণের অভিযোগ এনে ২২ আগস্ট দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন ওই নারী কনস্টেবল। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সাফিউর রহমান গত ১৫ আগস্ট রাত আড়াইটা থেকে ৪টা পর্যন্ত বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার দক্ষিণ পাশের নারী ব্যারাকে ভিকটিমের শয়নকক্ষে প্রবেশ করে ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করেন। এর আগে বিগত ৫ মাসে সপ্তাহে দুবার করে ধর্ষণ করেন এবং তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও চিত্র তার ব্যবহৃত আইফোনে ধারণ করে ব্লাকমেইল করেন।

এমআইএন/এএমএ/জিকেএস

Read Entire Article