নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ভাড়া দেওয়া পোশাক কারখানা সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে মালিকপক্ষকে কারখানা সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) মিজমিজি পাইনাদী রেকমত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী এ তথ্য জানান।
এর আগে শনিবার দুপুরে বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষকদের বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আটমাস আগে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ মো. কামাল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে ১০ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়া হয়। ওই ব্যবসায়ী সেখানে একটি পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন। শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালীন সময়ে ওই কারখানার ২০-২২ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে জনমনে।
বিগত সরকারের আমলে কেউ এ বিষয়ে মুখ না খুললেও কয়েকদিন আগে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাৎসহ কয়েকটি অনিয়ম, দুর্নীতির তথ্য সামনে আসলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামে। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের সময় পোশাক কারখানাটি সরিয়ে নেওয়ার দাবি ওঠে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, শিক্ষার্থীরা ১৩ লাখ লুট ও অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করলেও পরে স্কুলের বিভিন্ন বিষয়ের ১১ দাবি দেয় তারা। বিদ্যালয়ের সব আয়-ব্যয়ের হিসেব আমার কাছে রয়েছে। কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি। আমার বিরুদ্ধে ১৩ লাখ টাকা লুটের যে অভিযোগ আনা হয়েছিল সেটা একেবারে মিথ্যা ও বানোয়াট।
বিদ্যালয় ভাড়া দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানান, সরকার থেকে আমাদের কয়েকটি সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো কাজে লাগাতে ও স্কুলের উপার্জন বাড়াতে এ কারখানা ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। তিন মাসের ভাড়া হাতে পেয়েছিলাম। শিক্ষার্থীরা যখন বিক্ষোভে নামে তখন পরিস্থিতি শান্ত করতে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বিষয়টি সমাধানের জন্য লোক পাঠিয়েছিলেন। আমরা কারখানা মালিককে ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে চলে যেতে বলেছি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম মেম্বার বলেন, আমি সভাপতি থাকাকালীন সরকার থেকে কিছু সেলাই মেশিন দেওয়া হয়েছিল। স্কুলের কিছু আয়ের চিন্তা করে ওইগুলো দিয়ে প্রথমে একটি রুমে কাজ শুরু করা হয়। পরে একজন লোককে ভাড়া দেওয়া হয়। এরপর তো আমার পদ চলে গেছে শুনেছি মোহাম্মদ আলী স্যার নাকি ভাড়া নিতেন।
এ বিষয়ের নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাফর সাদিক চৌধুরী জানান, স্কুলের বিষয়টি আমাদের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) স্যার দেখছেন। বিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মো. আকাশ/আরএইচ/জেআইএম