এবারের বিপিএলে এখনও পর্যন্ত দুটি দলই সর্বাধিক ৭ খেলায় অংশ নিয়েছে। যার একটি রংপুর রাইডার্স, অন্যটি ঢাকা ক্যাপিটালস। এ দুই দলের অবস্থা আর চালচিত্রও একদম ভিন্ন। রংপুর ৭ খেলার সবকটায় জিতে সবার ওপরে। আর ঢাকা ক্যাপিটালস সমান ৭ খেলার ৬টিতে হেরে সবার নিচে।
তাদের নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী চিটাগাং কিংস ও ফরচুন বরিশালের পয়েন্ট ৬ করে। বাকি ৪ দল খুলনা টাইগার্স, সিলেট স্ট্রাইকার্স ও দূর্বার রাজশাহীর পয়েন্ট আরও কম, সমান ৪ করে। কাজেই ১৪ পয়েন্ট পাওয়া নুরুল হাসান সোহানের দল আপাততঃ ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
রংপুরের জয়রথ সচল। কিছুতেই থামছে না। ঢাকা ও সিলেটে প্রথম দুই পর্বে কোনো দল তাদের থামাতে পারেনি। এদিকে রংপুরের ৭ ম্যাচে অংশ নেয়ার কথা শুনে আবার ভাববেন না যে, তারা এরই মধ্যে সব দলের সাথে খেলে ফেলেছে।
বাস্তবে তা নয়। এখনও পর্যন্ত সোহানের দল ৪ দলের সাথে ৭ ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে ফরচুন বরিশাল (৮ উইকেট ও ৩ উইকেট), সিলেট স্ট্রাইকার্স (৩৪ রান ও ৮ উইকেট) এবং ঢাকা ক্যাপিটালসের (৪০ রান ও ৭ উইকেট) সাথে মুখোমুখি হয়েছে দুইবার করে। আর সিলেটে শেষ ম্যাচে রংপুরের কাছে ৮ রানে হেরেছে খুলনা টাইগার্স।
তার মানে দূর্বার রাজশাহী আর চিটাগাং কিংসের সাথে এখনও পর্যন্ত রংপুরের খেলা হয়নি। তা না হোক, যাদের সাথে হয়েছে তারা কেউই রংপুরের সাথে পেরে ওঠেনি। এ না পারার কারণ খুঁজতে গিয়ে আর কোন দিকে তাকানোর দরকার নেই। শুধু ব্যাটিং-বোলিংয়ের শীর্ষ ১০-এর তালিকায় নজর রাখলেই পরিস্কার হবে, কেন কি কারণে রংপুরের সাথে কেউ পেরে উঠছে না।
আসুন ব্যাটিং ও বোলিংয়ে শীর্ষ দশ আগে দেখে নেই- কারা কারা আছে? সেখানে পরিস্কার দেখা যাচ্ছে, রান তোলায় শীর্ষ দশে আছেন রংপুর রাইডার্সের চার-চারজন ব্যাটার- সাইফ হাসান, (৭ ম্যাচে ২২৮), অ্যালেক্স হেলস (৬ ম্যাচে ২১৮), খুশদিল শাহ (৭ ম্যাচে ৫ বার ব্যাট করে ২১৮) ও ইফতিখার আহমেদ (৬ বার ব্যাট করে ২০৪)।
প্রতিষ্ঠিত ব্যাটারদের ব্যাট কথা বলায় ব্যাটিংটা ঠিক আছে। যখন যেখানে প্রয়োজন সেখানে কেউ না কেউ জ্বলে উঠছেন, প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। আর সাথে বোলিং ব্যাকআপটাও হচ্ছে দারুণ। বোলারদের প্রায় সবাই বল হাতে জ্বলে উঠছেন।
উইকেট শিকারে শীর্ষ দশে আছেন রংপুর রাইডার্সের ৫ বোলার (খুশদিল শাহ, নাহিদ রানা, শেখ মাহদি হাসান, সাইফউদ্দিন ও আকিফ জাভেদ।
এর মধ্যে দুই স্পিনার খুশদিল শাহ, শেখ মাহদি হাসান এবং দ্রুত গতির নাহিদ রানা প্রত্যেকে সমান ৯টি করে উইকেট পেয়ে তালিকায় চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ট স্থানে আছেন।
আর দুই পেসার আকিফ জাভেদ ও সাইফউদ্দীন সমান ৮ উইকেট পেয়ে আছেন যথাক্রমে অষ্টম ও নবম স্থানে।
রংপুরের ৪ ব্যাটার আর ৫ বোলার পারফরমারদের সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছেন। এটাই বলে দেয় দলটির ক্রিকেটাররা মাঠে কতটা ভাল পারফর্ম করছেন। এক কথায় ব্যাট ও বল হাতে রংপুর রাইডার্সের ৮-৯ জন পারফরমার প্রায় ধারাবাহিকভাবে নিয়মিত ভাল পারফরম করছেন। এবং তাদের পারফরমেন্সের সাথে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না বাকি দলগুলোর বেশীর ভাগই।
যে দলের একঝাঁক ক্রিকেটার এতটা কার্যকর পারফরম করছেন, সেই দলকে আটকানো অন্য যে কোনো দলের জন্যই কঠিন। এর বাইরে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের সাহসী ও তেজোদ্দীপ্ত নেতৃত্ব এবং প্রয়োজনে শক্ত হাতে হাল ধরার ক্ষমতা রংপুরকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। আর তাই রংপুর রাইডার্স প্রায় দূর্দমনীয় দল হয়ে উঠেছে। ক্রিকেটারদের এ পারফরমেন্স বজায় থাকলে রংপুরকে অবস্থানচ্যুত করা যে কারো জন্যই হবে কঠিন।
এআরবি/আইএইচএস/এএসএম