নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শুরু হবে। সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে এ মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব উপলক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আবহমান গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিবছরই মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব আয়োজন করে।
ফাউন্ডেশনের লাইব্রেরি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান, জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খ-সার্কেল আসিফ ইমাম, ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি দেলোয়ার হোসেন, সোনারগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন এবং ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী এ লোক কারুশিল্প মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনী, লোকজ প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিদিন লোকজ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলা, কর্মরত কারুশিল্পীর কারু পণ্যের প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
মেলা চলাকালীন সময়ে ওই এলাকার যানজট, আইনশৃঙ্খলা ও খাদ্যের মূল্য তালিকা নিয়ে মতবিনিময় সভায় আলোচনা করা হয়। মেলা আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, এবারের মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ৩২টি স্টলসহ ১০০টি স্টল বরাদ্দ করা হয়েছে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৬৪ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে।
মেলায় সোনারগাঁয়ের কারুশিল্পের কারুকাজ, হাতি-ঘোড়া, মমি পুতুল, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁয়ের বাহারি জামদানি শিল্প, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, ঢাকার কাগজের শিল্প, রাজশাহীর মৃৎশিল্প, শখের হাঁড়ি, বাটিক শিল্প, খাঁদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য ও সিলেটের বেতশিল্পের স্টল থাকবে।
এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনি কাঁথা, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কারুশিল্প, মাগুড়া ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলংকার শিল্প, নাগর দোলা, বায়স্কোপ ও মিঠাই-মণ্ডার পসরা থাকবে স্টলগুলোতে।
প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে।