যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফকে হটিয়ে ২০১৭ সালে সৌদি আরবের রাজপরিবারের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন মোহাম্মদ বিন সালমান। সে সময় রাজকীয় ডিক্রির মাধ্যমে যুবরাজের সকল ক্ষমতা তার ওপর ন্যস্ত করেন তার বাবা সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ।
এরপরই সৌদি আরবের খোলস পাল্টে দিতে উঠে পড়ে লেগেছেন সংস্কারবাদী হিসেবে পরিচিত এই যুবরাজ। রক্ষণশীল সৌদি সমাজে আসে একের পর এক অবিশ্বাস্য পরিবর্তন। সমালোচকরা বলতে শুরু করেন আধুনিকতায় গা ভাসাতে গিয়ে পাপের রাজধানী হয়ে উঠছে ইসলামের এ পুণ্যভূমি।
যুবরাজের পাশাপাশি সৌদি আরবের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে সৌদি আরবকে বের করে আনতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন বিন সালমান। যার শুরুতেই বলা যায় পর্যটন উন্মুক্ত করা। শুধু তাই নয় পর্যটন আকৃষ্ট করতে ভিশন ২০৩০-এর আওতায় সৌদিতে সিনেমা হল ও ‘নাইট ক্লাব’ চালু করা হয়েছে। চলতি বছর দেশটিতে চালু করা হয়েছে মদের বার, যদিও এখানে প্রাথমিকভাবে অমুসলিম কূটনৈতিক ব্যক্তিরা প্রবেশ করতে পারবেন।
বর্তমানে আরব বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সিনেমা হল রয়েছে সৌদি আরবে। যার থেকে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে দেশটি আয় করেছে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি! এসবের মধ্যেই দেশটিতে অবাধে প্রবেশ করছে পশ্চিমা সংস্কৃতি। ইদানিং সৌদি আরবের বিভিন্ন স্থানে কনসার্ট আয়োজন একেবারেই ডালভাতে পরিণত হয়েছে, যা এক দশক আকে কল্পনাতেও আনা যেত না।
সমালোচনা উসকে দিয়ে সম্প্রতি দেশটিতে পালন করা হয়েছে হ্যালোইন। যাতে সৌদি আরবের নারী ও পুরুষদের বিভিন্ন অদ্ভূত সাজে অংশ নিতে দেখা যায়। রক্ষণশীল নাগরিক ও ধর্মবেত্তারা বলছেন এ ধরণের অনুষ্ঠান ইসলাম ও সৌদি সংস্কৃতির সঙ্গে একেবারেই বেমানান। এ ঘটনার পর দেশজুড়ে সমালোচনায় মেতে উঠেন সৌদি নাগরিকরা।
সম্প্রতি আরও একটি আপত্তিকর কাণ্ড ঘটেছে মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি অধ্যুষিত দেশটিতে। রাজধানী রিয়াদে লেবানিজ ফ্যাশক আইকন এলি সাব নির্দেশনায় আয়োজন করা হয় জমকালো এক ফ্যাশন শো’র। এতে মুসলিমদের পবিত্র কাবা শরীফের আদলে তৈরি করা হয় মঞ্চ, যার সামনে নাচ পরিবেশ করেন প্রায় অর্ধনগ্ন শিল্পীরা। এরপরই বিশ্বজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনায় মেতে উঠেন মুসলিমরা।