সৌদি-ইরানের থেকেও বেশি তেল ভেনেজুয়েলায়, তারপরও লাভে নেই

4 hours ago 3
ভেনেজুয়েলা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি তেলের ভাণ্ডার নিয়ে বসে আছে। ২০২৩ সালের হিসাবে দেশটিতে প্রায় ৩০৩ বিলিয়ন ব্যারেল তেল মজুত রয়েছে। এ পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি। এমনকি সৌদি আরব, ইরান ও কানাডার থেকেও এগিয়ে। কিন্তু এত বিপুল সম্পদ থাকার পরও দেশটি তেল রপ্তানি থেকে প্রত্যাশিত আয় করতে পারছে না। এর মূল সমস্যা লুকিয়ে আছে তেলের প্রকৃতিতে। ভেনেজুয়েলার প্রধান তেলক্ষেত্র অবস্থিত ওরিনোকো বেল্টে। এখানকার তেল অতিরিক্ত ভারী, ঘন ও সালফারসমৃদ্ধ। ফলে এটি উত্তোলন করা ব্যয়বহুল এবং জটিল প্রযুক্তি ছাড়া সম্ভব নয়। বাজারেও এ ধরনের তেল হালকা ক্রুডের তুলনায় ছাড়ে বিক্রি করতে হয়। ২০২৩ সালে ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি আয় দাঁড়ায় মাত্র ৪ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। তুলনায় সৌদি আরব পেয়েছে ১৮১ বিলিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ১২৫ বিলিয়ন এবং রাশিয়া ১২২ বিলিয়ন ডলার। একসময় ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় সরবরাহকারী ছিল। কিন্তু ১৯৯৮ সালে হুগো শাভেজ ক্ষমতায় আসার পর জাতীয়করণ, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও রাষ্ট্রীয় কোম্পানি পিডিভিএসএতে অব্যবস্থাপনা উৎপাদনকে নিচে নামিয়ে আনে। নিকোলাস মাদুরো ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। ২০১৭ ও ২০১৯ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে তেল রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে চীন, ভারত ও কিউবা ভেনেজুয়েলার প্রধান ক্রেতায় পরিণত হয়। তবে ২০২২ সালে সীমিতভাবে মার্কিন কোম্পানি শেভরনকে কাজের অনুমতি দেওয়া হলেও সেই আয় সরাসরি ভেনেজুয়েলা সরকারের হাতে পৌঁছায় না। ২০২৫ সালে ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় ফিরে ভেনেজুয়েলার তেল আমদানিকারক দেশগুলোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসান। এতে ভারত পিছু হটে গেলেও চীন এখনও তেল কিনছে। এর মধ্যেই চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ভেনেজুয়েলার দৈনিক তেল রপ্তানি ৯ লাখ ব্যারেল ছাড়িয়েছে, যা নয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে আগের স্বাভাবিক উৎপাদনের তুলনায় এটি অনেক কম। মূলত, বিশাল ভাণ্ডার থাকা সত্ত্বেও কঠিন উত্তোলন, দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোর দুর্বলতা ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা—সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলা তেল খাত থেকে প্রত্যাশিত আয় করতে পারছে না। ফলে তেলসমৃদ্ধ দেশ হয়েও অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি। তথ্যসূত্র : আল জাজিরা  
Read Entire Article