সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া প্রতিরক্ষা চুক্তিটিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কূটনৈতিক ব্যর্থতা বলে দাবি করেছে দেশটির প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে দলটি বলেছে, চুক্তিটি আমাদের জন্য জন্য ‘গুরুতর উদ্বেগের’ ও এটি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলবে।
ভারতীয় কংগ্রেসের মহাসচিব জয়রাম রমেশ এক্সে দেওয়া পোস্ট লেখেন, হঠাৎ অপারেশন সিঁদুর বন্ধ করার এক মাসের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে লাঞ্চের আমন্ত্রণ জানান পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল ও সেনাপ্রধান আসিম মুনির। মোদী চীনে সফর করার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিকে চীনের গোপন সামরিক স্থাপনা ঘুরিয়ে দেখান।
‘এবার সৌদি আরব, পহেলগাম হামলা চলাকালে প্রধানমন্ত্রী সেখানে অবস্থান করছিলেন, সেই দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে ‘কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা’ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এটি নিঃসন্দেহে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তান ও সৌদি আরব ঐতিহাসিক এক প্রতিরক্ষা চুক্তিতে সই করে। এখন থেকে দেশ দুটির কোনো একটিতে তৃতীয় পক্ষের হামলা হলেই উভয় দেশ যৌথ পদক্ষেপ নেবে। বুধবার রাজধানী রিয়াদের ইয়ামামা প্যালেসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে এই ‘কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’ স্বাক্ষর করেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
চুক্তিতে বলা হয়েছে, যে কোনো এক দেশের ওপর হামলা হলে তা উভয় দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
পাকিস্তান-সৌদি আরবের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক কৌশলগত সামরিক সহযোগিতা, অর্থনৈতিক স্বার্থ ও ইসলামী ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। রিয়াদ বহুদিন ধরেই ইসলামাবাদের আর্থিক সহায়তা ও তেল সরবরাহের অন্যতম প্রধান উৎস।
চুক্তির পর পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এই চুক্তি দুই দেশের নিরাপত্তা জোরদার করা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং যৌথ প্রতিরোধশক্তি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি বহন করে। এতে প্রায় আট দশক ধরে চলে আসা ঐতিহাসিক অংশীদারত্ব, ভ্রাতৃত্ব ও ইসলামী সংহতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে দুই পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ঐতিহাসিক ও কৌশলগত দিকগুলো পর্যালোচনা করেন ও সাধারণ স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে, পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা পাকিস্তান-সৌদি আরব কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হওয়ার খবর দেখেছি। ভারত সরকার আগেই জানতো যে, দুই দেশের দীর্ঘদিনের সহযোগিতাকে আনুষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। আমরা এই চুক্তির প্রভাব আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর কী হতে পারে, তা পর্যালোচনা করবো। ভারতের জাতীয় স্বার্থরক্ষা এবং সবক্ষেত্রে সামগ্রিক জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এসএএইচ