বরগুনার পাথরঘাটার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আমন ধানের বীজতলা করার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার উত্তর পশ্চিম জালিয়াঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে করা হয়েছে এ বীজতলা। এ নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
রোববার (২৪ আগস্ট) সকালে বিদ্যালয়ের মাঠে ধান রোপণের সংবাদ সংগ্রহে গেলে সাংবাদিকদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাইরুল আলম। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দীপক কুমার বিশ্বাস। সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে বিষয়টি তিনি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সাংবাদিক সূত্রে জানা যায়, জুলাই মাসে টানা বর্ষণে কৃষিজমিতে আমন ধানের বীজতলা পানিতে তলিয়ে যায়। এতে উত্তর পশ্চিম জালিয়াঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিদাতা পরিবারের সদস্য মোসলেম নামের এক কৃষক প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে ধানের বীজতলা করেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে আরটিভির পাথরঘাটা প্রতিনিধি সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। এসময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাইরুল আলম সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেন বক্তব্য নিতে গেলে সাংবাদিককে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক তাওহীদুল ইসলাম শুভ বলেন, পাথরঘাটার একটি বিদ্যালয়ের মাঠে ধানের বীজতলা করায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, এমন তথ্য পেয়ে আমি ওই স্কুলে গিয়ে এর সত্যতা পাই। পরে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে তথ্য চাইলে তিনি আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরে এ বিষয়টি আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানাই।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাইরুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সময় মাঠে জমিদাতা সদস্য ধানের বীজতলা করেছেন। বিষয়টি আমি জানতাম না। পরে আমি তাদের বীজতলা সরিয়ে নিতে বলি।
সংবাদ সংগ্রহে বাধা ও সাংবাদিককে লাঞ্ছনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলছিল তাই আমি তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দীপক কুমার বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে ধান রোপণের বিধান নেই। তবে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ফুল গাছ লাগানো যাবে বিদ্যালয়ের ছাদে বা আঙিনায়। এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ নেওয়া হবে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার পরিবেশ দ্রুত ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নুরুল আহাদ অনিক/এমএন/জেআইএম