পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এজিপি) দুলাল চন্দ্র দেবনাথের বিরুদ্ধে স্ত্রী-সন্তানকে নির্যাতন করে বাসার গ্যাস-পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) রাতে পটুয়াখালী শহরের পিটিআই এলাকায় ওই আইনজীবীর বাসায় গিয়ে এর সত্যতাও পাওয়া গেছে। তবে অভিযুক্ত আইনজীবীর দাবি তিনি স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, ১৩ বছর আগে দুলাল চন্দ্র দেবনাথের সঙ্গে তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের চার বছর বয়সী মেয়ে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তারা শহরের পিটিআই রোডের নিজ বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু কয়েক বছর ধরে দুলাল চন্দ্র দেবনাথ হঠাৎ স্ত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন। মাঝে মধ্যে মারধরও করেন স্ত্রীকে। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন দুলাল চন্দ্র দেবনাথ আরেক আইনজীবীর সঙ্গে বিবাহবহিভূর্ত বসবাস করছেন। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অভিযোগ দেন তিনি। এতে অভিযুক্ত আইনজীবী ক্ষিপ্ত হয়ে বাসার বিদ্যুৎ-গ্যাস ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ১ নভেম্বর থেকে তিনি সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ভুক্তভোগী আরও বলেন, গত ১৫ দিন ধরে বোন তার বাসা থেকে পানি আনে, ভাই ভাত নিয়ে আসেন। সেগুলো খেয়ে কোনো মতে বেঁচে আছি। কারেন্ট না থাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে থাকছি।
ভুক্তভোগী নারীর ভাই সুমন দেবনাথ বলেন, বোনের ওপর অত্যাচার ও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে থানায় জিডি করেছে দুলাল চন্দ্র দেবনাথ। আমার বাসা থেকে খাবার এনে ওদেরকে খাওয়াই। শিশু বাচ্চাটির দিকে তাকালে বুকটা ফেটে যায়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দুলাল চন্দ্র দেবনাথ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বাসার বিদ্যুৎ,পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয় স্বীকার করে জানান, স্ত্রীকে তিনি তালাক দিয়েছেন। এ বিষয় আদালতে মামলা চলছে।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ ইমতিয়াজ বলেন, এমন একটি ঘটনা শুনেছি আমি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এটিএম মোজাম্মেল হোসেন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। এ বিষয়ে ওই আইনজীবীর স্ত্রী লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমরা ইতোমধ্যে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে নোটিশ করেছি। দুই পক্ষ নিয়ে বসবো। তাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে পরবর্তী বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আব্দুস সালাম আরিফ/আরএইচ/এমএস