মালয়েশিয়ার বড় রাষ্ট্র-সংযুক্ত তহবিলগুলো দেশটির স্টার্টআপ ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ বাড়াবে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে বহিরাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা। দেশটির দ্বিতীয় অর্থমন্ত্রী আমির হামজা আজিজান এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
নিক্কেই এশিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার পেনশন তহবিল এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ), সার্বভৌম সম্পদ তহবিল খাজানাহ ন্যাশনাল এবং বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান পারমোডালান ন্যাশনাল বেরহাদ আগামী পাঁচ বছরে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর জন্য অতিরিক্ত ১২০ বিলিয়ন রিঙ্গিত (২৭ বিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ করবে।
আরও পড়ুন>>
- মালয়েশিয়ায় চালু হচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্পেশাল পাস
- বিদেশে জন্ম নেওয়া শিশুদের নাগরিকত্ব দেবে মালয়েশিয়া
- মালয়েশিয়ায় রমজানে মূল্যবৃদ্ধি রোধে কড়া পদক্ষেপ সরকারের
তিনি বলেন, আমরা প্রাতিষ্ঠানিক তহবিলগুলোকে মালয়েশিয়ায় পুনঃবিনিয়োগে উৎসাহিত করছি, তবে তা ঐতিহ্যবাহী স্থায়ী আয়ের উৎস বা পুঁজিবাজারের পরিবর্তে বেসরকারি খাতে। এই বিনিয়োগ প্রযুক্তি ও অবকাঠামোর মতো উচ্চ প্রবৃদ্ধি খাতে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৈদেশিক বিনিয়োগের ওপর নির্ভরতা কমবে
সরকারের লক্ষ্য, দেশীয় বিনিয়োগ বাড়িয়ে মালয়েশিয়ার বৈদেশিক বিনিয়োগের ওপর নির্ভরতা কমানো। মন্ত্রী বলেন, এতে দেশের ঝুঁকি কমবে। কারণ আমরা শুধু বিদেশি বিনিয়োগের ওপর নির্ভরশীল থাকছি না। বরং দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ মিলিয়ে আরও বৈচিত্র্যময় ও টেকসই অর্থনীতি গড়ে তুলছি।
২০২৪ সালে মালয়েশিয়া ৩৭৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন রিঙ্গিত বৈদেশিক বিনিয়োগ অনুমোদন করেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি।
তবে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির সম্ভাব্য প্রভাবের কারণে ভবিষ্যতে এশিয়ার উৎপাদন খাতের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আমির হামজা বলেন, রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগকারীদের দেশীয় ব্যবসায় বিনিয়োগের ফলে মালয়েশিয়ার মূলধন বাজার আরও প্রসারিত হবে। তিনি বলেন, দেশে বিনিয়োগের মাত্রা বেড়েছে, মানুষ ব্যয় করছে এবং ব্যবসা সম্প্রসারিত হচ্ছে। এতে বোঝা যায়, আমরা সঠিক পথে রয়েছি।
মালয়েশীয় সরকার বর্তমানে অর্থনীতির চালিকাশক্তিকে আরও বৈচিত্র্যময় করতে চাইছে। বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও ডেটা সেন্টার খাতের সম্প্রসারণে জোর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পর্যটন খাতের মতো প্রচলিত শিল্পগুলোর উন্নয়নেও নজর দেওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়া বরাবরই মুক্ত বাণিজ্যের দেশ। বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাসের ফলে মালয়েশিয়া বিনিয়োগের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।
কেএএ/