চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চলতি আসরে এখন পর্যন্ত মাত্র এক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে দুবাইয়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আজ রোববার হবে দ্বিতীয় ম্যাচ। মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান।
দুবাইকে স্পিনসহায়ক ও ধীরগতির উইকেট বলে মনে করেন অনেকে। মনে না করার কারণও বা কী হতে পারে! প্রথম ম্যাচে এ উইকেটে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে মাত্র ২২৮ রানে। এ রান করতে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও ভারতকে খেলতে হয়েছিল ৪৭ ওভার পর্যন্ত।
তুলনামূলক ধীরগতির উইকেটে যেকোনো দলই সাধারণত স্পিনারদের গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কিন্তু পাকিস্তানের চিরাচরিত বৈশিষ্ট; পেসারদের ওপরই বেশি নির্ভরতা। এবারও হচ্ছে না ব্যতিক্রম।
পাকিস্তান দলে মাত্র একজন ফুলটাইম স্পিনার (আবরার আহমেদ) রয়েছেন। সঙ্গে পার্ট-টাইম বোলার হিসেবে সালমান আলি আগা (অফস্পিন) ও খুশদিল শাহ (বাঁহাতি স্পিনার) আছেন। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের দলে উপযুক্ত স্পিনারের অভাব আছে কিনা, ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন করা হয় পাকিস্তানের কোচ আকিব জাভেদকে।
জবাবে পাকিস্তান কোচ স্রেফ জানিয়ে দিয়েছেন, যা আছে তাই নিয়ে লড়বে পাকিস্তান। নিজেদের শক্তির ওপরই নির্ভর করবেন তারা।
আকিব জাভেদ বলেন, ‘আমাদের নিজেদের শক্তির ওপর নির্ভর করেই খেলবো। আমাদের দলে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না। আমরা বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে দল নির্বাচন করেছি এবং আমরা এই দলকেই সমর্থন দেবো।’
মূলত ফাস্টবোলারদের ওপরই আস্থা পাকিস্তানের। তিন পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ ও হারিস রউফের দিকে তাকিয়ে তারা এবং পেসাররাই পাকিস্তানের ম্যাচ উইনার হবেন বলে মনে করেন কোচ।
আকিব জাভেদ বলেন, ‘আমাদের ফাস্ট বোলিং আক্রমণ সেরা। এরা ম্যাচ উইনার। সব দলের জন্য একই কৌশল অনুসরণ করা জরুরি নয়। আমাদের বোলাররা ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য রাখে। তাই আমাদের অন্য দলগুলোর মতোই কৌশল নিতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।’
ভারত-পাকিস্তান লড়াই অন্য যেকোনো ম্যাচের তুলনায় অধিক চাপ ও উত্তেজনা তৈরি করে। পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা চাপে পড়বেন কিনা, তা জানতে চাওয়া হয় কোচের কাছে।
আকিব জাভেদ মনে করেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের উচ্চচাপের পরিবেশ খেলোয়াড়দের নিজেদের প্রমাণ করার সেরা সুযোগ দেয় এবং অতিরিক্ত চাপই ম্যাচের বিশেষ আকর্ষণ তৈরি করে।
তিনি বলেন, ‘এটা নকআউট হোক বা অন্য কিছু, তাতে কিছু যায় আসে না। এটি শুধু একটি খেলা নয়, এর চেয়েও অনেক বেশি কিছু। সেটাই এর সৌন্দর্য। ইতিবাচকভাবে দেখলে এটি কোনো ব্যক্তিগত খেলোয়াড় বা দলের জন্য নিজেদের প্রমাণ করার সেরা সময় ও সুযোগ।’
আকিব যোগ করেন, ‘চাপ কী? খেলার আগে ও পরে কী হবে সেই ভাবনা। কেউ জানে না আসলে কী হবে। এই মুহূর্তে সবাই কেবল অনুমান করছে যে, ম্যাচে কী হতে পারে। এটাই এর সৌন্দর্য।’
খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে পাকিস্তান কোচ বলেন, ‘চাপ নেওয়াই একজন খেলোয়াড়ের কাজ। যদি এই চাপ সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে আর কী থাকবে?’
ভারত ইতোমধ্যেই দুবাইয়ে একটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে এবং স্বাভাবিকভাবেই তারা বেশি দর্শক সমর্থন পাবে। তবে ৫২ বছর বয়সী পাকিস্তান কোচ মনে করেন, খেলোয়াড়দের দর্শকদের নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই।
আকিব জাভেদ বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় খেলুক না কেন, এমনকি যদি স্টেডিয়াম থেকে দর্শক সরিয়েও দেওয়া হয়, তবুও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের উত্তেজনা একই থাকবে। এটাই এর সৌন্দর্য। দর্শক কী করে? যখন আপনি ভালো খেলেন, তখন তারা আপনাকে সমর্থন দেয়, করতালি দেয়। আর খারাপ খেললে, সেটা ভারত বা পাকিস্তান যে দলেরই হোক না কেন, তখন তাদের দর্শকই দলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে। তাই একজন খেলোয়াড়ের উচিত দর্শকদের নিয়ে বেশি না ভাবা।’
বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় ভারতের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান।
এমএইচ/এমএস