রাজধানীর রামপুরার বনশ্রী এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে ১৬০ ভরি সোনা ও এক লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এক বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতাউর রহমান আকন্দ জাগো নিউজকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বাসায় প্রবেশের সময় দুর্বৃত্তরা স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনকে একটি বাড়ির সামনে গুলি করে স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীকে গেট খোলার কথা বললেও তিনি খোলননি। তিনি কেন গেট খোলেননি এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় আনা হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবারকে থানায় আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তারা থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করলে মামলা হবে। এছাড়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্তের কাজ চলছে।
ছিনতাইয়ের ভিডিওতে দেখা যায়, রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বনশ্রীর ডি ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ির সামনে তিনটি মোটরসাইকেলে মোট সাতজন ওই ব্যবসায়ী আনোয়ারকে ঘিরে ধরে। ব্যবসায়ীকে একটি বাড়ির গেটের সামনের রাস্তায় ফেলে দিয়ে একজন তার কাছ থেকে একটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।
একই সময় আরেকজন তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে যাচ্ছিল। এসময় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ‘মাগো মাগো’ বলে চিৎকার করছিলেন। এছাড়া দুর্বৃত্তদের যখন ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে বাধা দিচ্ছিলেন ওই ব্যবসায়ী তখন পাশে দাঁড়ানো আরেকজন তাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তিনি চিৎকার দিতে দিতে দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে কিছুটা দৌড়ে পেছনের দিকে পালিয়ে যান।
পরে আহত অবস্থায় আনোয়ারকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি এখনো চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনার পর ২৩ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাত ৩টার দিকে রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসায় দেশের চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করছে। যেহেতু তারা দেশ থেকে প্রচুর টাকা স্থানান্তর (পাচার) করেছে, সেই টাকা তারা ব্যবহার করছে। এই টাকা ব্যবহার করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমরা কোনো অবস্থায়ই এটা করতে দেবো না। যে কোনোভাবেই এটা প্রতিহত করবো।
তিনি বলেন, দিনে-রাতে যে বাহিনীর প্রয়োজন হবে তারা সেখানে যাবে এবং প্রতিহত করবে। আওয়ামী লীগের যারা এগুলো করছে তাদের ঘুম আমি হারাম করে দেবো। তারা কোথায়ও কোনো স্থান পাবে না।
সব বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, তারা টহল কার্যক্রম আরও বাড়াবে। আগামীকাল থেকে যেন কোথাও কিছু না ঘটে এ ব্যাপারে তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) ব্যবস্থা নেবে। যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভালোভাবে কার্যক্রম করতে না পারে তাদের বিরুদ্ধেও আমি অ্যাকশন নেবো।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন আরও উন্নতি হবে, অবনতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। দেশকে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তাদের কাউকে ছাড় দেবো না বলেও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
টিটি/ইএ/জিকেএস