স্বামীর বাড়িতে না যাওয়ায় কিশোরীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন

3 months ago 47

বরিশালে স্বামীর বাড়িতে না যাওয়ায় হাবিবা আক্তার (১৩) নামে এক কিশোরীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে নিজ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। শনিবার (১ জুন) রাতে কিশোরীর মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে শিকলে বেঁধে নিজ ঘরে আটক রাখেন।

হাবিবা জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের জামাল হাওলাদার ও মারুফা বেগম দম্পতির মেয়ে।

রোববার (২ জুন) দুপুরে খবর পেয়ে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সেসময় মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজ খবর নেন আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম।

তিনি জানান, মেয়েটিকে তার পরিবারের সদস্যরা জোর করে অন্য একজায়গায় বিয়ে দেন। কিন্তু মেয়েটির অন্য এক ছেলেকে পছন্দ থাকায় সে সেখানে যেতে চায়। এ কারণে মেয়েটিকে তার পরিবারের সদস্যরা বেঁধে রেখেছে বলে খবর পাই। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটিকে শিকলে বেঁধে রাখার কোনো বিষয় চোখে পড়েনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই মাস আগে স্কুলছাত্রী হাবিবার পরিবারের সদস্যরা জোর করে সাজিদ মোল্লার সঙ্গে বিয়ে দেন। সাজিদ একই উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের শাহজাহান মোল্লার ছেলে। বিয়ের পর স্বামী ও তার পরিবারের নির্যাতন সইতে না পেরে শনিবার সকালে পালিয়ে ওই স্কুলছাত্রী বাবার বাড়িতে চলে আসে। তখন মা মারুফা বেগম, বাবা জামাল হাওলাদার ও দুলাভাই আলামিন আকনসহ কয়েকজন মিলে হাবিবাকে শিকল ও রশি দিয়ে ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন।

এ ঘটনা টের পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। এরপর শনিবার রাতে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে বাসায় যান। পুলিশ আসার খবরে হাবিবার পরিবারের সদস্যরা ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যান।

হাবিবার মা মারুফা বেগম বলেন, আমরা দরিদ্র হওয়ায় হাবিবার লেখাপড়ার খরচ বহন করতে পারছিলাম না। তাই তাকে বিয়ে দিয়ে দিই। স্বামীর বাড়িতে ফিরে না যাওয়ার কারণে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে।

শাওন খান/এফএ/এএসএম

Read Entire Article