স্বাস্থ্যবিমা : চিকিৎসার খরচ কমানোর এক সহজ উপায়
বর্তমানে চিকিৎসা খরচ এতটাই বেশি যে অনেকেই বড় ধরনের অসুস্থতায় পড়লে অর্থের জন্য দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। এই সমস্যার সহজ সমাধান হতে পারে স্বাস্থ্যবিমা।
অনেকেই এখনও জানেন না, স্বাস্থ্যবিমা কীভাবে কাজ করে, কেন করা উচিত আর কোথা থেকে করা যায়। আসুন, সহজ করে জেনে নিই—স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা, নিয়ম এবং করার উপায়।
আরও পড়ুন : ফোন-ল্যাপটপের হ্যাকিং থেকে নিরাপদ থাকুন
আরও পড়ুন : গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এড়াতে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
স্বাস্থ্যবিমা কেন করবেন?
স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়—হাসপাতালের বিল, ওষুধ, ডাক্তার দেখানো, অপারেশন, অ্যাম্বুলেন্স ইত্যাদি সবকিছুতেই অনেক টাকা লাগে।
স্বাস্থ্যবিমা থাকলে এই খরচের বড় একটা অংশ বিমা প্রতিষ্ঠান বহন করে। এতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে আপনার বা পরিবারের বড় ধাক্কা সামলানো সহজ হয়।
স্বাস্থ্যবিমায় যেসব সুবিধা পাওয়া যায়
স্বাস্থ্যবিমা করলে সাধারণত নিচের সুবিধাগুলো পাওয়া যায়:
- ডাক্তার দেখানোর ফি (ভিজিট)
- বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচ (যেমন: রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, এমআরআই)
- অপারেশন খরচ
- হাসপাতালে ভর্তি ফি ও বেড ভাড়া
- আইসিইউ, সিসিইউ, এইচডিইউ-এর খরচ
- অ্যাম্বুলেন্স খরচ
- ওষুধ ও ড্রেসিংয়ের খরচ
- কিছু ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের আগেই অগ্রিম টাকাও পাওয়া যায়
- চুক্তিবদ্ধ হাসপাতালগুলোয় হেলথ কার্ড দেখিয়ে ছাড়ে চিকিৎসা
কোন কোন রোগে স্বাস্থ্যবিমা পাওয়া যায়?
সব রোগের জন্য নয়, নির্দিষ্ট কিছু বড় রোগের জন্য স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা মেলে। যেমন:
- হার্ট অ্যাটাক
- স্ট্রোক
- ক্যানসার
- কিডনি সমস্যা
- পক্ষাঘাত (প্যারালাইসিস)
- বড় ধরনের আঘাত
- অঙ্গ প্রতিস্থাপন
- ডেঙ্গু (কিছু পলিসিতে)
আরও পড়ুন : কম বয়সেই চুল পেকে যাচ্ছে যে ৫ পুষ্টির অভাব
আরও পড়ুন : যে অভ্যাসগুলো ধীরে ধীরে ধ্বংস করছে আপনার মস্তিষ্ক
বিঃদ্রঃ – প্রত্যেক পলিসিতে কভার করা রোগের তালিকা আলাদা হতে পারে।
স্বাস্থ্যবিমা কীভাবে কাজ করে?
স্বাস্থ্যবিমা সাধারণত দুইভাবে কাজ করে:
ক্যাশলেস সুবিধা: চুক্তিবদ্ধ হাসপাতালে গেলে গ্রাহককে নিজে টাকা দিতে হয় না, বিমা প্রতিষ্ঠান সরাসরি হাসপাতালকে টাকা পরিশোধ করে দেয়।
রিফান্ড সুবিধা: গ্রাহক চিকিৎসার খরচ আগে নিজে বহন করেন, পরে বিল ও প্রমাণপত্র জমা দিলে বিমা প্রতিষ্ঠান সেই টাকার পুরোটা বা কিছুটা ফেরত দেয়।
স্বাস্থ্যবিমা করবেন কীভাবে?
স্বাস্থ্যবিমা করতে চাইলে কয়েকটি সহজ উপায় আছে:
- সরাসরি কোনো বিমা কোম্পানির অফিসে গিয়ে কথা বলুন।
- নির্ভরযোগ্য বিমা প্রতিনিধির মাধ্যমে করতে পারেন।
- অনেক প্রতিষ্ঠান এখন অনলাইন বিমা সুবিধাও দিচ্ছে—আপনার তথ্য দিয়ে ঘরে বসেই সব করা যায়।
- প্রিমিয়াম (বাৎসরিক ফি) আপনি এখন মোবাইল ব্যাংকিং, কার্ড বা অনলাইন মাধ্যমে দিতে পারেন।
কিছু জরুরি পরামর্শ
- স্বাস্থ্যবিমা করার সময় কয়েকটি ব্যাপার খেয়াল রাখা জরুরি:
- শুধু প্রতিনিধির কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেবেন না। নিজে কাগজপত্র ভালো করে পড়ুন।
- প্রিমিয়াম কত দিতে হবে, কী কী রোগ কভার করে—এসব পরিষ্কার করে জেনে নিন।
- কোনো ফাঁকা জায়গায় (যেমন নমিনির ঘর) সই করবেন না।
- সব তথ্য বুঝে তবেই সাইন করুন।
চিকিৎসার খরচ কমাতে স্বাস্থ্যবিমা হতে পারে বড় ভরসা। নিয়ম মেনে, সঠিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে স্বাস্থ্যবিমা করলে আপনার ও পরিবারের জন্য এটি হতে পারে ভবিষ্যতের একটা নিরাপদ প্রস্তুতি।
সতর্কতা : এই প্রতিবেদনটি একটি সাধারণ বিশ্লেষণ