বর্তমান সময়ের ব্যস্ত জীবনে স্মার্টওয়াচ শুধু সময় দেখার যন্ত্র নয়, বরং স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ, ফিটনেস ট্র্যাকিং, মেসেজ চেক করা, এমনকি কল রিসিভ করার মতো নানা সুবিধা দিচ্ছে। তবে অনেক ব্যবহারকারী অজান্তেই কিছু ভুল করেন, যা ঘড়ির পারফরম্যান্স নষ্ট করে দেয় বা শরীরের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। স্মার্টওয়াচকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হলে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।
চলুন জেনে নেই স্মার্টওয়াচ ইউজারের সাধারণ ১০টি ভুল এবং সেগুলো এড়ানোর উপায়।
১. ঘড়ি সবসময় চার্জারে রেখে দেওয়া
অনেকেই মনে করেন, সবসময় চার্জে লাগিয়ে রাখলে ব্যাটারি ক্ষতি হবে না। আসলে এটা ভুল ধারণা। লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি অতিরিক্ত চার্জে থাকলে এর স্থায়িত্ব দ্রুত কমে যায়। চার্জ ২০-৮০ শতাংশের মধ্যে রাখাই ব্যাটারির জন্য সবচেয়ে ভালো।
২. নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট না করা
স্মার্টওয়াচে সময়মতো আপডেট না করলে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ে এবং নতুন ফিচারও মিস হয়ে যায়। অনেকেই অলসতার কারণে বা ডাটা বাঁচাতে আপডেট করেন না। অথচ সময়মতো আপডেট করলে ঘড়ি দ্রুত, নিরাপদ ও আরও কার্যকর হয়।
৩. পানিরোধী ভেবে যে কোনো পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা
সব স্মার্টওয়াচ পানি প্রতিরোধী নয়। অনেকে ভেবে নেন বৃষ্টিতে বা সুইমিং পুলে ব্যবহার করলে সমস্যা হবে না। কিন্তু পানি ভেতরে ঢুকে গেলে সেন্সর নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই কেনার সময় ওয়াটার-রেজিস্ট্যান্স রেটিং দেখে নিতে হবে এবং ব্যবহারেও সতর্ক থাকতে হবে।
৪. ঘড়ি খুব টাইট বা খুব ঢিলে করে পরা
হার্ট রেট বা অক্সিজেন সেন্সর সঠিকভাবে কাজ করার জন্য ঘড়ি হাতের কবজিতে ঠিকমতো ফিট হতে হবে। খুব টাইট হলে রক্ত সঞ্চালনে প্রভাব ফেলে, আবার ঢিলে হলে সেন্সর সঠিকভাবে ডাটা ধরতে পারে না। তাই আরামদায়কভাবে ফিট করে পরা উচিত।
৫. সেন্সরের নিয়মিত পরিষ্কার না করা
ঘড়ির পেছনের সেন্সর ঘামে, ধুলোয় বা ময়লায় ঢেকে গেলে সঠিক তথ্য দিতে পারে না। অনেক ব্যবহারকারী ঘড়ি পরিষ্কার করেন না, ফলে ডাটার নির্ভুলতা নষ্ট হয়। সপ্তাহে অন্তত একবার নরম কাপড় দিয়ে সেন্সর মুছে নেওয়া উচিত।
৬. সব নোটিফিকেশন চালু রাখা
স্মার্টওয়াচের সুবিধা হলো হাতের কবজিতেই নোটিফিকেশন পাওয়া। তবে সব অ্যাপের নোটিফিকেশন চালু রাখলে ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যায় এবং মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে। প্রয়োজনীয় অ্যাপগুলোর নোটিফিকেশন বেছে রাখা ভালো।
৭. অতিরিক্ত অ্যাপ ইনস্টল করা
অনেকে স্মার্টওয়াচে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ইনস্টল করে রাখেন। এতে মেমোরি ও ব্যাটারি খরচ বাড়ে এবং ঘড়ি স্লো হয়ে যায়। কেবল দরকারি অ্যাপ ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
৮. স্বাস্থ্য ডাটা বিশ্লেষণে অবহেলা করা
স্মার্টওয়াচ ঘুম, হার্টবিট, স্ট্রেস বা ক্যালরি বার্নের তথ্য দেখায়। কিন্তু অনেকে এগুলো দেখেও গুরুত্ব দেন না। অথচ নিয়মিত ডাটা খেয়াল করলে জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। শুধু রেকর্ড নয়, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শও নেওয়া উচিত।
৯. ঘড়ি সবসময় হাতেই পরে থাকা
২৪ ঘণ্টা ঘড়ি হাতে পরে থাকা অনেক সময় ত্বকে অস্বস্তি বা অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। ঘাম জমে গেলে ফাঙ্গাল ইনফেকশনও হতে পারে। তাই দিনে কিছু সময় ঘড়ি খুলে রাখা ও হাত পরিষ্কার রাখা জরুরি।
১০. চার্জিং কেবল বা অ্যাডাপ্টার অবহেলা করা
অনেকে যে কোনো চার্জার দিয়ে স্মার্টওয়াচ চার্জ দেন। এতে ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই কোম্পানি অনুমোদিত চার্জার ও কেবল ব্যবহার করা উচিত এবং চার্জ দেওয়ার সময় অতিরিক্ত গরম জায়গা এড়িয়ে চলা ভালো।
- আরও পড়ুন
- ভূমিকম্পের আগাম বার্তা জানাবে স্মার্টওয়াচ
- জিপিএস সুবিধাসহ এক চার্জে ১০ দিন চলবে এই স্মার্টওয়াচ
কেএসকে/এএসএম