সড়কের অভাবে খাটিয়ায় করে রোগী বহন

2 weeks ago 6

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়নের খুলনা গ্রামের মানুষ যুগের পর যুগ রাস্তার অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অচল সড়কের কারণে ভালো বিয়ে হয় না এ গ্রামের ছেলে-মেয়েদের, মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া হয় মরদেহ বহনের খাটিয়ায় করে।

গ্রামবাসী জানান, হারদল ছাদেম মোল্লার বাড়ি থেকে টেকেরহাট আক্কাস হাওলাদারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক বছরের পর বছর অবহেলায় পড়ে আছে। যেখানে রাস্তা আছে সেখানে হাঁটু সমান কাদা, আর যেখানে রাস্তা নেই সেখানে হাঁটু সমান পানি। ফলে বর্ষা মৌসুমে এ পথ দিয়ে চলাচল কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র সড়কটির এতটাই জরাজীর্ণ অবস্থা যে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনই জুতা হাতে নিয়ে হেঁটে যেতে হয়। রাতের বেলা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার কথা ভাবতেও ভয় হয়। পাকা সড়কে পৌঁছাতে হলে মসজিদের মরদেহ বহনের খাটিয়া এনে ৪-৫ জন লোক জোগাড় করতে হয়।

সড়কের অভাবে খাটিয়ায় করে রোগী বহন

স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেক সময় মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মাঝপথেই মৃত্যু হয়।

খুলনা গ্রামের বাসিন্দা মো. আলামীন হাওলাদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ, অসুস্থ মানুষের জীবন সবকিছুই এই রাস্তার কারণে হুমকির মুখে। রোগী নিয়ে যেতে হয় মসজিদের লাশ বহনের খাটিয়ায় করে, বিয়ের সম্বন্ধও ভেঙে যাচ্ছে সড়কের এমন বেহাল দশার কারণে। আমরা বহুবার জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছি, কিন্তু কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

আরও পড়ুন-

আরেক বাসিন্দা মো. শাহাদাত হোসেন জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পরিবার নিয়ে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। তবুও বাপের ভিটা রক্ষার জন্য বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে মালামাল পরিবহনে ৪-৫ গুণ বেশি খরচ পড়ছে, আবার শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না।

সড়কের অভাবে খাটিয়ায় করে রোগী বহন

এ বিষয়ে নাচনমহল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম (খোকন) বলেন, খুলনা গ্রামের রাস্তার করুণ অবস্থার বিষয়ে আমি অবগত। সত্যিই তারা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের জন্য চেষ্টা করছি।

দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তির দ্রুত সমাধান চান এলাকাবাসী। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা সংস্কার ও টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন।

মো. আতিকুর রহমান/এফএ/এমএস

Read Entire Article