চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে হতদরিদ্র নারীদের জন্য বরাদ্দ চাল (ভিডব্লিউডি) আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ফারুক আহমেদ মিয়াজি উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। একই ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামের হতদরিদ্র নারী আয়েশা আক্তার এ অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, তার নামে বরাদ্দ হওয়া তিন মাসের চাল তুলে নিয়েছেন ওই নেতা।
আয়েশা আক্তার বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সাঈদ খান আমাকে একটি ভিডব্লিউডি কার্ডের কথা বলেন। তার নির্দেশে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিই সভাপতি ফারুক মিয়াজির কাছে। জুলাই মাসে চাল বিতরণ শুরু হলেও আমি কার্ড হাতে পাইনি। পরে জানতে পারি, আমার নামে কার্ড হয়েছে, কিন্তু সেখানে অন্য এক নারীর ছবি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আমার নামের চালও তুলে নিয়েছেন ফারুক মিয়াজি।
তিনি আরও জানান, তিন মাস পর আবু সাঈদ খানের সহায়তায় কার্ডটি ফেরত পেলেও সেই সময়ের চাল আর পাননি। এ ঘটনায় তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতির কাছে।
ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সাঈদ খান বলেন, চেয়ারম্যান ১৯টি ভিডব্লিউডি কার্ড দিয়েছেন অসহায় পরিবারের জন্য। এর মধ্যে একটি দিয়েছিলাম আয়েশা আক্তারকে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফারুক মিয়াজির কাছে দিতে বলি। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে গেলেও আয়েশা চাল পাননি। পরে কার্ড উদ্ধার করে তাকে দিই। তার অভিযোগ সত্য।
ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন বলেন, আমার এলাকার জন্যও একটি কার্ড নেওয়া হয়েছিল। প্রয়োজনীয় কাগজ ফারুক মিয়াজির কাছে দিলেও তিনি বারবার ‘দেখছি’ বলতে বলতে চার মাস পার করেছেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ খন্দকার বলেন, মোট ১৯টি কার্ডের সব কাগজপত্র ফারুক মিয়াজির কাছেই ছিল। রিসিভও করেছেন তিনিই। সাহাপুর ও কড়ৈতলীর দুটি কার্ড হারিয়ে যায়। পরে সাহাপুরের আয়েশার কার্ড উদ্ধার করতে পারলেও কড়ৈতলীর রেহানার কার্ড এখনো পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফারুক আহমেদ মিয়াজি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন মোহাম্মদ রাজন বলেন, গত মে মাসে ১২২টি ভিডব্লিউডি কার্ড আসে। এর মধ্যে ১৯টি কার্ড ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দিয়েছিলাম, তাদের প্রস্তাবিত নাম অনুযায়ী। কার্ডগুলো তারা কীভাবে বিতরণ করেছেন, সে বিষয়ে আমি অবগত নই।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাকছুদা আক্তার বলেন, বিষয়টি মাত্রই জেনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শরীফুল ইসলাম/এমএন/জেআইএম

5 hours ago
5









English (US) ·