হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে শতাধিক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি হাসপাতাল, যানবাহন ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
সোমবার (৭ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে শহরের তিমিরপুর এলাকায় তিনঘণ্টার বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ চলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শহরের পূর্ব তিমিরপুর ও আনমনু এলাকার মানুষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তখন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে শহরের পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। পর দিন শনিবার সকাল থেকে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আনমুনু গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শহর ও আনমনু পয়েন্টে জড়ো হতে থাকলে আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। এক পর্যায়ে শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
রোববার সকালে ও রাতে সংঘর্ষ ও চোরাগুপ্ত হামলা হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুরও করা হয়। এর জেরে সোমবার সকালে উভয় গ্রামের লোকজন পূর্বপ্রস্তুতি সভা করে। বিকেল ৩টার দিকে পূর্ব ঘোষণা দিয়ে উভয় গ্রামের কয়েকশ মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে আনমনু গ্রামের পক্ষ নেয় নোয়াপাড়া, রাজার বাজার এবং পূর্ব তিমিরপুরের পক্ষ নেয় পশ্চিম তিমিরপুর ও চরগাঁও গ্রামের নারী পুরুষ। দুটি পক্ষের হাজারও মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে শতাধিক নারী পুরুষ আহত হন।
সংঘর্ষ চলাকালে শহরে শতাধিক দোকান পাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়া হয়। এসময় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভাঙচুর, মাছ বাজার, হোটেলে ভাঙচুর লুটপাট করা হয়েছে। এ সময় এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় শহরজুড়ে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান জানান, ‘বিষয়টি সমাধানের আহ্বান জানিয়েছি। সংঘর্ষ ও লুটপাটের বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। তবে পুরো বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। শহরে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/আরএইচ/জেআইএম