এক ঝাঁক শিশু কোরআন তিলাওয়াত করছে। কিন্তু তাদের তিলাওয়াতে কোনো শব্দ নেই। শিশুদের সামনে বসে মাদ্রাসা শিক্ষকও এ নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করছেন না। কারণ কোরআন তিলাওয়াত করতে থাকা এই শিশুরা কানে শুনতে পায় না। তাই হাতের ইশারায় কোরআন তিলাওয়াত করে যাচ্ছে তারা। কিছুক্ষণ পর মাদ্রাসা শিক্ষককেও শিশুদের সঙ্গে ইশারায় কোরআন শেখাতে দেখা যায়।
বিশেষ এই মাদ্রাসার অবস্থান ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের ইয়োগাকর্তায়। এর প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল কাহফি নামক এক ব্যক্তি। এক সময় তার স্বপ্ন ছিল কানে শুনতে পায় না, এমন শিশুদের কোরআন শেখাবেন তিনি। সেই ভাবনা থেকেই দারুল আ’শোম মাদ্রাসা চালু করেন তিনি। চালুর পর থেকেই নানা শ্রেণিপেশার মানুষের কাছ থেকে দারুণ সাড়া পাচ্ছেন আব্দুল কাহফি।
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা, কালিমান্তান এবং বালি থেকে সুলাওয়াসি সব জায়গা থেকেই ছাত্রছাত্রীরা আসছেন দারুল আ’শোম মাদ্রাসায়। এতে বিভিন্ন জেলার মানুষের মধ্যে মিথস্ক্রিয়াও ঘটছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভাব আদান-প্রদানে মাদ্রাসার শিক্ষকরাও সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ বা সাংকেতিক ভাষায় কথা বলা শিখছেন। এভাবে তারা শিক্ষার্থীদের কোরআনের আয়াতের ব্যাখ্যাও করছেন।
কাহফি বলছিলেন, আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের এই বোর্ডিং মাদ্রাসায় পুরো ইন্দোনেশিয়া থেকে নারী-পুরুষ পড়তে আসছে। সুলাওয়াসি, কালিমানতা, আচেহ, বালি, মাদুরা সব জায়গা থেকে মানুষজন পড়তে আসছে। ঘরে ঘরে কোরআনের আলো এভাবে ছড়িয়ে দিতে পারায় কাহফির আনন্দের কোনো অন্ত নেই।
২০১৯ সালে চালু হওয়া দারুল আশোম মাদ্রাসায় এখন ১০৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের বয়স ৭ থেকে ২৮ বছর। অর্থাৎ শিশুদের পাশাপাশি যুবকরাও এই মাদ্রাসায় কোরআন শিখতে আসছেন। ইন্দোনেশিয়া জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ। দেশটির জনসংখ্যা ২৮ কোটি, যার ৮৮ শতাংশের বেশি মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী।