হাসপাতালে ছিল না অক্সিজেন, জন্মের আধাঘণ্টা পর মারা গেলো শিশু

4 months ago 28

নোয়াখালীতে অস্ত্রোপচারে জন্ম নেওয়ার আধাঘণ্টার পর এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসায় অবহেলায় শিশুটি মারা গেছে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পূর্ব বাজার লাইফ কেয়ার হসপিটালে এ ঘটনা ঘটে। এসময় রোগীর স্বজনরা অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ তুলে হইচই-তুলকালাম কাণ্ডের খবরে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

হাসপাতালে ছিল না অক্সিজেন, জন্মের আধাঘণ্টা পর মারা গেলো শিশু

নবজাতকের চাচা মারুফ হোসেন জুয়েল অভিযোগ করে বলেন, ‘মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে ছোট ভাই আমির আলী রিয়াজের স্ত্রী কাওছার আক্তার সুবর্ণাকে লাইফ কেয়ার হসপিটালে ভর্তি করি। রাত সাড়ে ৮টায় নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শামছুন নাহার অস্ত্রোপচার করেন। এতে এক কন্যাসন্তান জন্ম নেয়।’

তিনি বলেন, ‘শিশুর জন্মের পর আইসিইউ এবং অক্সিজেনের প্রয়োজন হতে পারে তা আগে থেকেই জানতেন ডা. শামছুন নাহার। কিন্তু শিশুর জন্মের পর তাকে অক্সিজেন দিতে না পারায় রাত সোয়া ৯টা দিকে তার মৃত্যু হয়। এসময়ের মধ্যে বারবার বলার পরও হাসপাতালের কেউ রোগীর চিকিৎসায় বা সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। আমি মনে করি এটি হাসপাতাল নামের কসাইখানা।’

হাসপাতালটির চিকিৎসা সহকারী রাকিব উদ্দিন শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এটি ডা. শামছুন নাহার নিজ দায়িত্বে ভর্তি করেছেন বলে জানান। এ বিষয়ে আর কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

এ বিষয়ে ডা. শামছুন নাহার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি জানতাম হাসপাতালে অক্সিজেনসহ চিকিৎসার সব ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু অক্সিজেন ছিল না তা আমার জানা ছিল না। আমি বাচ্চা প্রসবের পর প্রসূতিকে সেলাই নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব আমার নয়।’

হাসপাতালে ছিল না অক্সিজেন, জন্মের আধাঘণ্টা পর মারা গেলো শিশু

হাসপাতালটির মালিক ডা. আবু তাহের জাগো নিউজকে বলেন, ‘রোগীর পজিশন আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। যা তার স্বজনরা আগে থেকেই জানতেন। নোয়াখালীতে কোনো হাসপাতালে শতভাগ চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। এমন রোগীকে এখানে সিজার করা উচিত হয়নি। তারপরও রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে এর সমাধান করা হবে।’

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গণ্ডগোলের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেননি।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছি। রোগীর স্বজনের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/জিকেএস

Read Entire Article