‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’ চবি শিক্ষার্থীর মাথায় সতর্কবার্তা

2 days ago 10
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে রামদার কোপে আহত সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুনের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও তার মাথার খুলি এখনো জোড়া লাগেনি। খুলে ফেলতে হয়েছে তার মাথার খুলির একাংশ। ব্যান্ডেজে জড়িয়ে রাখা হয়েছে পুরো মাথা। আর যাতে ভুলে কেউ তাতে হাত না দেয়, সেজন্য ব্যান্ডেজে লেখা হয়েছে— ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’। এর আগে গতকাল বুধবার বিকেল ৫টার দিকে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) পার্কভিউ হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার তালুকদার জিয়াউর রহমান শরীফ কালবেলাকে জানান, মামুনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তিনি খাবার খাচ্ছেন। তবে খুলির ক্ষতস্থান পুরোপুরি সেরে ওঠেনি। সবকিছু ঠিকঠাক হলে খুলি বসাতে তিন থেকে চার মাস সময় লাগতে পারে। গত রোববার সংঘর্ষের সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় নগরের পার্কভিউ হাসপাতালে আনা হলে ওই দিন রাতে তার মাথায় অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের পরই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সোমবার সন্ধ্যায় তার লাইফসাপোর্ট খুলে ফেলা হয়। এদিকে গুরুতর আহত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ ৫ দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। তার কনশাস লেভেল এখন ৬-এর আশপাশে। একজন স্বাভাবিক মানুষের কনশাস লেভেল ১৫। এটি ১০-এর ওপরে ওঠার আগপর্যন্ত তাকে আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।  ইমতিয়াজের বিষয়ে তালুকদার জিয়াউর রহমান শরীফ কালবেলাকে জানান, তার কনশাস লেভেল বা চেতনার মান এখনো ৫ থেকে ৯ এর মধ্যে উঠানামা করছে। তবে যিনি তার অস্ত্রোপচার করেছেন তিনি আশাবাদী।  এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলামকে। নাইমুলের শরীরের ভাসকুলার ইনজুরি রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর ফটক এলাকায় এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। রাত সোয়া ১২টা থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয় বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে স্থানীয়দের দাবি, তাদের ৩০ জনের মতো আহত হয়েছে।  পরবর্তীতে ঘটনার তিনদিন পর মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহিম বাদী হয়ে ৯৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনায় আটজনকে আটক করেছে পুলিশ।
Read Entire Article