ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির ম্যাচ দেখতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার উসমান খাজার মা। ২০২৪-২০২৫ মৌসুমের এই সিরিজের বক্সিং ডে টেস্টে (পাঁচ ম্যাচ সিরিজের চতুর্থ টেস্ট) এই ঘটনা ঘটেছিল বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার নিজেই।
আজ শুক্রবার প্রকাশিত ‘এ ন্যাশনাল রেসপন্স টু ইসলামোফোবিয়া’ নামের একটি সরকারি প্রতিবেদনে ওই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন ৩৮ বছর বয়সী খাজা।
তিনি জানান, তার মা ফোজিয়া তারিক এমসিজিতে (মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড) ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন। তখন দুজন যুবক কেবল হিজাব পরার কারণে তাকে লক্ষ্য করে গালিগালাজ করে।
প্রতিবেদনে খাজা লেখেন, ‘আজকের সমাজে ঘৃণা সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। আর গত বছরের বক্সিং ডে টেস্টে আমার মা নিজেই তা অনুভব করেছেন। তিনি সবসময় পরিবারের সঙ্গে আমাকে খেলতে দেখতে আসেন। এটা সবসময় আমাদের জন্য আনন্দের মুহূর্ত। কিন্তু এবার দুজন যুবক তার পিছনে দাঁড়িয়ে দুই কানে অশ্লীল গালি দিতে শুরু করে, কেবলমাত্র হিজাব পরার কারণে।’
তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় তার মা ভীষণ ভয় পান এবং হতবাক হয়ে যান। নিরাপত্তাকর্মীরা ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করে এবং অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশ ডাকেন। তবে তার মা চাননি আর কোনো ব্যবস্থা নিতে বা বিষয়টি প্রকাশ করতে।
খাজার ভাষায়, ‘আমার মায়ের আত্মা এত মহান যে তিনি বললেন, আমি এক ঘটনার জন্য এই ছেলেদের জীবনের ক্ষতি করতে চাই না।’
বাঁহাতি অসি ওপেনার জানান, ঘটনা অবগত হয়ে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি, কিন্তু মায়ের ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানিয়ে বিষয়টি সতীর্থদের কাছ থেকেও গোপন রেখেছিলেন।
গর্বিত মুসলিম হিসেবে খাজা দীর্ঘদিন ধরেই মানবাধিকার ইস্যুতে সরব। দুই বছর আগে নিজের জুতায় ‘সব জীবনই সমান গুরুত্বের’ এবং ‘স্বাধীনতা একটি মানবাধিকার’ এই বাক্যগুলোর সঙ্গে ফিলিস্তিনি পতাকা এঁকে মাঠে নামেন। যে কারণে আইসিসি তাকে সতর্কবার্তাও দেয়। এসব কিছুতে দমে যাননি অসি ক্রিকেটার।
এ ছাড়া চলতি বছর চাকরি হারানো সাংবাদিক পিটার লালরকে সমর্থন জানান খাজা। সামাজিক মাধ্যমে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনা করায় রেডিও স্টেশন এসইএন থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন পিটার।
এমএইচ/এএসএম