দেশের বাজার স্থিতিশীল রাখতে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে শুল্কমুক্ত চাল। গেলো ১২ আগস্ট থেকে এই বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। প্রথম দিকে ২০ থেকে ২৫ ট্রাক চাল আমদানি হলেও চাহিদা থাকায় এখন প্রতিদিন ৮০-১০০ ট্রাক চাল আমদানি হচ্ছে। বন্দর দিয়ে আমদানি বাড়ায় কমতে শুরু করেছে সব ধরনের চালের দাম। বেশি দাম কমেছে চিকন চালের।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হিলি স্থলবন্দরে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্দর দিয়ে মূলত ভারত থেকে সম্পা কাটারি, মিনিকেট,৪০/৯৪ ও স্বর্ণা-৫ জাতের চাল আমদানি হচ্ছে। আমদানি শুরুর দিকে প্রতি কেজি সম্পা কাটারি জাতের চাল বন্দরে বিক্রি হয়েছিল ৭০ টাকা দরে। বর্তমানে সেই চাল কেজিতে ৪ টাকা কমে বন্দরে বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকায়। ৪০/৯৪ জাতের চাল বিক্রি হতো ৬০ টাকা কেজি দরে। বর্তমানে কেজিতে ৩ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫৭ টাকায়। তবে সামান্য দাম কমেছে মোটা জাতের স্বর্ণা-৫ চালের। কেজিতে ২ টাকা কমে ৫২ টাকা কেজির চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।
হিলি স্থলবন্দরে চাল কিনতে আসা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী রফিক বলেন, আমি ঢাকা থেকে এই বন্দরের চাল কিনতে এসেছি। এখানকার চালের মান ভালো ও দামও কম। সে কারণে এখানে চাল কিনতে আসা। গত কয়েকদিনে ২ হাজার টন চাল কিনেছি। যে পরিমাণ চাল আসছে তাতে আরও দাম কমবে।
নাটোর থেকে চাল কিনতে আসা মাহবুব বলেন, হিলি বন্দরে চাল কিনতে অনেক সুবিধা। কারণ অন্য বন্দরগুলোতে গুদামে গুদামে ঘুরে চালের মান দেখে কিনতে হয় কিন্তু এখানে সেটা করতে হয় না। বন্দরের ভেতরে অনেক চাল বোঝাই ট্রাক সারিবদ্ধ হয়ে আছে চালের মান দেখে সেখানে দাম করে আমরা কিনতে পারছি। এতে হয়রানি হতে হয় না। চালের দাম স্থিতিশীল রাখার দাবি জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক নুর ইসলাম বলেন, সরকারের অনুমতি পাওয়ার পর আমরা হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু করেছি। প্রতিদিন বন্দরে ৮০ থেকে ১০০ ট্রাক চাল আমদানি হচ্ছে। চাল আমদানির ফলে বাজার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসছে। কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা চালের দাম কমেছে । সরকার চালের যে অনুমতি দিয়েছে সবগুলো বন্দরে প্রবেশ করলে চালের দাম আরও কমে আসবে।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা এমআর জামান বাঁধন বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে যে চাল আমদানি হচ্ছে সেগুলো শুল্কায়ন করে দ্রুত ছাড়করণে ব্যবসায়ীদের আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করছি। যাতে করে আমদানির পর তারা দ্রুত বাজারে চাল সরবরাহ করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু চাল আমদানিতে শুল্ক নেই তাই শুধু ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর দিয়ে ব্যবসায়ীরা চাল খালাস করতে পারছেন।
হিলি কাস্টমসের তথ্য মতে, গত ১২ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ১৩৬ ট্রাকে ৪৮ হাজার ৪৭১ টন চাল আমদানি হয়েছে এই বন্দর দিয়ে।
মো. মাহাবুর রহমান/এমএন/এএসএম