জাপানের এক প্রবীণ পর্বতারোহী কোকিচি আকুজাওয়া বয়সের সীমাকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিহাস গড়লেন। ১০২ বছর বয়সে ফুজি পর্বতের চূড়ায় উঠে তিনি হয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি, যিনি জাপানের এই সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণ করেছেন।
আকুজাওয়া ১৯২৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। এর আগেও তিনি ৯৬ বছর বয়সে ফুজি পর্বতে উঠেছিলেন। তবে এবার বয়স ও শারীরিক দুর্বলতা সত্ত্বেও আবারও শীর্ষে পৌঁছে গেছেন। এই অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস।
কৃতিত্বটিকে তিনি অবশ্য খুব সাধারণভাবে দেখেছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি ছয় বছর আগেও এখানে উঠেছিলাম। দৃশ্যটা আগেও দেখেছি। তাই খুব বিশেষ কিছু মনে হয়নি।”
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, অবসরে যাওয়া এই পশুপালক কৃষক গুনমা অঞ্চলের বাসিন্দা। বয়সের ভারে থেমে না থেকে তিনি নিয়মিত পাহাড়ে হাঁটতেন। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো পাহাড়ে ওঠা ছিল তার অভ্যাস। তবে এ বছরের শুরুতে পাহাড়ে হাঁটার সময় পড়ে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে শিংলস রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে যায়।
ডাক্তাররা তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকলেও, আকুজাওয়া হাল ছাড়েননি। দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং প্রতিদিন ভোরে এক ঘণ্টা হাঁটা ও পাহাড়ে ওঠার মাধ্যমে ফিটনেস ফিরিয়ে আনেন।
অবশেষে আগস্টের শুরুতে তিনি ফুজি পর্বতে ওঠার অভিযানে নামেন। তিন দিনে ভাগ করে ধীরে ধীরে উঠে পথে দুটি রাত কাটান পাহাড়ি কুটিরে। উচ্চতাজনিত অসুস্থতা তাকে প্রায় হাল ছেড়ে দিতে বাধ্য করলেও পরিবারের সদস্যরা তাকে অনুপ্রাণিত করেন। তার সঙ্গে থাকা নাতনি, যিনি একজন নার্স, বিশেষ সহায়তা দেন।
আকুজাওয়ার মেয়ে ইউকিকো (৭৫) বলেন, “বাবার সুস্থ হয়ে ওঠা এত দ্রুত ছিল যে ডাক্তাররা বিশ্বাসই করতে পারেননি।” তিনি আরও জানান, বাবার একমাত্র ইচ্ছা ছিল আবারও ফুজির চূড়ায় ওঠা।
জাপানের এই সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ৩,৭৭৬ মিটার (১২,৩৮৮ ফুট) উঁচু। বিশ্বের নানা প্রান্তের পর্বতারোহীদের কাছে এটি স্বপ্নের শৃঙ্গ। তবে নিজের দ্বিতীয়বার চূড়া জয় করার পর আকুজাওয়ার সাফ উত্তর- “আর নয়।”