নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের গুলিতে নিহত তিন জামায়াত-শিবির কর্মীর লাশ ১১ বছর পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) তাদের লাশ উত্তোলন করা হয়। তারা হলেন চরহাজারী ইউনিয়নের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল আজিজ ওরফে রায়হান (১৮), রামপুর ইউনিয়নের নুর ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২০) ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের আবুল কালামের ছেলে সাইফুল বাবলু (২০)। এর মধ্যে বামনী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সাইফুল, বসুরহাট দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী রায়হান শিবির কর্মী ছিলেন এবং বাবলু পেশায় রং মিস্ত্রি ও জামায়াত কর্মী ছিলেন।
জানা যায়, স্বজনদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশের পর নিহতদের পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশগুলো তোলা হয়। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মঈনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমির মাওলানা মোশাররফ হোসাইন বলেন, নিহতের স্বজন ১১ বছর পর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা করেছেন। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর বসুরহাট পৌরসভার মতিউর রহমান সজীব (১৭) নামে আরও এক শিবির কর্মীর লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ১৪ ডিসেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল হয়। কোম্পানীগঞ্জ শাখা জামায়াতে ইসলামীর এই বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় জামায়াত ও শিবিরের সাত নেতাকর্মী নিহত হন। যাদের মধ্যে তিনজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাকি চারজনের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফন করা হয়, তখন মামলাও হয়নি। পরে ৫ আগস্ট-পরবর্তী এ ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল, সাবেক ইউএনও নুরুজ্জামানসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয় আদালতে। পরে আদালতের নির্দেশে কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়।
মামলায় আসামি করা হয় কোম্পানীগঞ্জ থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপপরিদর্শক সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া, আবুল কালাম আজাদ, শিশির কুমার বিশ্বাস ও উক্যসিং মারমাকে।