দীর্ঘ ১১ বছর পর দেশে ফিরছেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার এক সময়ের জুনিয়র অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শিশির মনির।
তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশে ফিরবেন। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন তিনি।
যদিও বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এই আইনজীবীর। কিন্তু ফ্লাইটের নির্ধারিত সূচি বিলম্বের কারণে তার পৌঁছাতে দেরি হবে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের পক্ষে আইনজীবী প্যানেলের প্রধান হিসেবে কাজ করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ১২টায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার ৫ দিন পর ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর দেশত্যাগ করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। এরপর দীর্ঘ ১১ বছর ধরে বিদেশে ছিলেন তিনি। বিদেশে থাকাকালীন তিনি জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেন এবং আমার বাংলাদেশ পার্টিতে (এবি পার্টি) প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে যোগদান করেন। চলতি বছরের ১৭ আগস্ট সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের পক্ষে ডিফেন্স টিমের প্রধান আইনজীবী ছিলেন। যে টিমের অন্যতম সদস্য ছিলেম বর্তমান চিফ প্রসিকিউটরের দায়িত্বে থাকা আইনজীবী মুহাম্মদ তাজুল ইসলামও।
তার জন্ম ১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে। বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। ১৯৯০ সালে তিনি দ্য ল’ কাউন্সেল নামে একটি আইনি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে হন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী।
লন্ডনে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দল থেকে তিনি জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেন। তখন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান এক বার্তায় বলেছিলেন, তার পদত্যাগে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। পদত্যাগ করা যেকোনো সদস্যের স্বীকৃত অধিকার। আমরা দোয়া করি তিনি যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আমরা আশা করি তার সঙ্গে আমাদের মহব্বতের সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।
এফএইচ/এএমএ/জেআইএম