চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে সারাদেশে ১০৩৬ কন্যাসহ ২৩৬২ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এ সময়ে উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে নারী হত্যার ঘটনা।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের (বামপ) কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরে নারী মানবাধিকার সংস্থাটি।
‘পারিবারিক আইনে সমতা আনি, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করি’- এ স্লোগান সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ (২৫ নভেম্বর-১০ ডিসেম্বর) ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস-২০২৪ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
বামপ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংস্থাটির কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা।
আরও পড়ুন
রেখা সাহা বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদে সংরক্ষিত ১৬টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ১০৩৬ জন কন্যাসহ ২৩৬২ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গত ১১ মাসে নারী ও কন্যার বিরুদ্ধে নানা ধরনের সহিংসতার মধ্যে উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে নারী হত্যার ঘটনা। বিভিন্ন কারণে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে শিশুকন্যাসহ ৪৮৬ জন নারীকে।
জাতিসংঘ লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতাবিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন-এর তথ্য সূত্রে জানা যায়, শুধু ২০২৩ সালেই সারা বিশ্বে প্রতি ১০ মিনিটে একজন নারী অথবা কন্যা পরিবারের সদস্য ও তার সঙ্গী দ্বারা হত্যার শিকার হয়েছে। অমানবিক, পাশবিক ও নৃশংস এসব ঘটনায় নারীর অগ্রযাত্রায় সৃষ্টি হয় পাহাড় সমান প্রতিবন্ধকতা। নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় শুধু ব্যক্তি নারী নয়, পরিবার, সমাজ এবং পরবর্তী প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা যে নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নারীর প্রতি বৈষম্যের চরম বহিঃপ্রকাশ তা আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। নারীর পক্ষে অনেক আইন হয়েছে, নীতিমালা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু চিত্র পরিবর্তন হয়নি।
আরও পড়ুন
পারিবারিক সহিংসতাকে নারীর প্রতি সহিংসতার বড় ক্ষেত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর বড় কারণ হচ্ছে পারিবারিক আইনে অসমতার ফলে সৃষ্ট নারীর ব্যক্তিজীবনের সব পর্যায়ে অধিকারহীনতা।
নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা রোধে বামপ পুত্র ও কন্যার সমঅধিকার নিশ্চিত, নারীর জন্য ক্ষতিকর প্রথা বন্ধ, ধর্ষণের শিকার নারীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করাসহ ২৫টি সুপারিশ তুলে ধরে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বামপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু প্রমুখ।
এসআরএস/এমকেআর/এমএস