১২০০ কোটি টাকা ব্যয় করেও মৃতপ্রায় কুমার নদ

3 days ago 10

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মাদারীপুরের কুমান নদ খননে দুই দফায় খরচ করা হয়েছে ১২০০ কোটি টাকা। অথচ স্রোতের দেখা নেই নদে। ফলে গচ্ছা গেছে সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা। বর্তমানে অযত্ন-অবহেলা আর দখলে-দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে কুমার নদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার কুমার নদের তীরে একসময় গড়ে উঠেছিল ঐতিহ্যবাহী চরমুগরিয়া বন্দর ও টেকেরহাট বন্দর। এখন তা অতীত। অথচ দুই দশক আগেও মাদারীপুর থেকে খুলনা বন্দরে যাতায়াত করা হতো এই কুমার নদ দিয়ে। মাদারীপুরের সঙ্গে নৌপথে খুলনা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুরের  যোগাযোগব্যবস্থা ভালো ছিল। খুলনা থেকে মাদারীপুর সদর উপজেলার চরমুগরিয়া বন্দর এবং রাজৈরের টেকেরহাট বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসতো বড় বড় স্টিমার ও নৌকা।

কুমার নদকে টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খনন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সরকারের পক্ষ থেকে দুই দফায় ১২০০ কোটি টাকা খরচ করে নদ খনন করা হয়। তবে সেই খনন কোনো কাজেই আসেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট এলাকার কুমার নদের জমি দখল করে নিয়েছেন অনেকে। ফলে দখল আর দূষণে কুমার নদ সরু খালের মতো আকার ধারণ করেছে। স্রোত নেই। নদের কোথাও কোথাও করা হচ্ছে চাষাবাদ।

রাজৈর উপজেলার টেকেরহাটের বাসিন্দা মতিন রহমান বলেন, ‘এই নদের পানি আগে সব কাজে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন ময়লা-আবর্জনায় দূষিত হওয়ায় ব্যবহার করা যায় না। নদে এখন গোসল করা তো দূরের কথা, দুর্গন্ধের কারণে পানির কাছেই যাওয়া যায় না। অথচ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুইবার খনন করা হয়েছে কুমার নদ। তারপরও নদের এই অবস্থা!’

চরমুগরিয়া এলাকার বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম বলেন, একসময় কুমার নদকে ঘিরে চরমুগরিয়া বন্দর গড়ে উঠেছিল। অথচ সেই নদ আজ অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। নদটি দ্রুত দখল ও দূষণমুক্ত করে খনন করা দরকার।

মাদারীপুরের ইতিহাস গবেষক সুবল বিশ্বাস বলেন, আগামী প্রজন্ম ও পরিবেশের কথা চিন্তা করে মাদারীপুরের নদী ও নদগুলোকে রক্ষা করতে হবে।

এ বিষয়ে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল কাদের চৌধুরী বলেন, অনেক আগে বিআইডব্লিউটিএর মাধ্যমে নদ খনন করা হয়েছিল। বর্তমানে অবৈধ দখল উচ্ছেদের কাজ চলমান। নতুন করে খননের জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জেআইএম

Read Entire Article