সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটি অ্যাম্বুলেন্স ১৪ বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে কোনোরকমে সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেটাও মাসে দু’একবার নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থায় মুমূর্ষু রোগীদের জেলা শহর বা উন্নত কোনো হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব হয় না। এতে রোগীর স্বজনদের বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ওপর নির্ভর করতে হয়।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত খোলা স্থানে দুটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। যার চাকাসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। চুরি হয়ে গেছে কিছু মূল্যবান যন্ত্রাংশ। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় অ্যাম্বুলেন্স দুটি পুরোপুরি জরাজীর্ণ।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৬১ সালে চালু হয় ১০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এরপর ৩১ শয্যা ও পরবর্তীতে ২০১৮ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় হাসপাতালটি। উপজেলার এক লাখ ২৪ হাজার ৭৪টি পরিবারের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার একমাত্র প্রধান প্রতিষ্ঠান এটি। এজন্য ১৯৯৮ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় ঔষধাগার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুটি অ্যাম্বুলেন্স দেয়। কিন্তু ১২ বছর চলার পর ২০১০ সালে অ্যাম্বুলেন্স দুটি একদম অকেজো হয়ে যায়। পরে ওই বছর নতুন আরও একটি অ্যাম্বুলেন্স দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই অ্যাম্বুলেন্সটি দিয়েই রোগী পরিবহন করা হচ্ছে। তবে এটিও প্রতি মাসে মেরামত করে চালাতে হয়।
কথা হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার আলতাফ হোসেনের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো মুমূর্ষু রোগীকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল অথবা শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে একটি পুরাতন অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেটাও মাসে কয়েকবার বিকল হয়ে যায়। এজন্য রোগীদের ভাড়া করা অ্যাম্বুলেন্সের ওপর নির্ভর করতে হয়। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েন দরিদ্র রোগীদের স্বজনরা। কারণ বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া অনেক বেশি হয়। তখন তারা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রোগীদের অন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। এই দুটি অ্যাম্বুলেন্স সচল থাকলে সব সময় সেবা দেওয়া যাবে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল হক জাগো নিউজকে বলেন, তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দুটি ২০১০ সাল থেকেই একদম অকেজো হয়ে গেছে। তবে বর্তমানে যে অ্যাম্বুলেন্সটি চালাচ্ছি সেটার ইঞ্জিনে মাঝে মধ্যেই কাজ করাতে হয়। এ কাজের কারণে অবশ্য হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সেবা কিছুটা সময় বন্ধ থাকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমীন আলম জাগো নিউজকে বলেন, ওই অ্যাম্বুলেন্স দুটি একদম অকেজো হয়ে পড়ে আছে। আবার বর্তমানে যেটা চালু রয়েছে সেটাও যেকোনো সময় অচল হয়ে যেতে পারে। পড়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্স দুটির সংস্কার করা সম্ভব না। তাই তিনি নিলামে বিক্রির প্রক্রিয়া করছেন বলে জানান।
এফএ/এমএস