১৫ শতাংশ করে প্রাতিষ্ঠানিক অপ্রদর্শিত সম্পদ বৈধের পক্ষে আইসিএবি

3 months ago 44

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে প্রতিষ্ঠানের অপ্রদর্শিত সম্পদ বৈধ করার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে তারপক্ষে সাফাই গেয়েছে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। তবে ব্যক্তিগত অপ্রদর্শিত আয় বিনাপ্রশ্নে বৈধ করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে কোনো অভিমত দেয়নি আইসিএবি।

চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের এ সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দীণ বলেছেন, সরকার আর্থিক প্রতিবেদন ফেয়ার পজিশনে আনতে চেষ্টা করছে। করপোরেট গভর্নেন্সকে নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। জবাবদিহিতাকে একটা জায়গায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছে বলেই এ ইনিশিয়েটিভ নিয়েছে সরকার।

প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের ভাবনা তুলে ধরতে শনিবার (৮ জুন) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

আইসিএবি সভাপতি বলেন, ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ডিভিএস) হওয়ার আগে ২, ৩, ৪টি আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির প্রবণতা আমরা দেখেছি ২০২০ সালের আগ পর্যন্ত। ২০২০ সালের পর থেকে এটা কমেছে। ২০২০ সালের পর থেকে যে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে তার বেস (ভিত্তি) আর্থিক প্রতিবেদন কি ছিল। বেস আর্থিক প্রতিবেদন ছিল যেটার ট্যাক্স সাইটে তারা জমা দিয়েছে, সেটা। ট্যাক্স সিস্টেমের কারণে ওটাই তাকে কন্টিনিউ করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের সমাজে একটা কালচার ছিল, যেটাকে আমরা অ্যাভয়েড করতে পারিনি তার আগে পর্যন্ত। না সরকার পেরেছে, না আমরা পেরেছি। সেখানে আমরা অ্যাড্রেস করতে পারিনি ২০২০ সালের আগ পর্যন্ত। ২০২০ সালে আইসিএবি তার স্ব-উদ্যোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ডিভিএস করে এটাকে কার্বাউট (কমিয়ে আনা) করার চেষ্টা করেছে।

যখনি কার্বাউট করার চেষ্টা করেছে, তখন বেস আর্থিক প্রতিবেদন ধরে যখন সামনের দিকে আর্থিক প্রতিবেদন করতে গেছে, তার কিছু আনডিসক্লোজ অ্যাসেট রয়ে গেছে যেগুলো অ্যাড্রেস করতে পারছে না। সেটা হয় তো ১০ বছর আগে প্রকিউর করা অ্যাসেট বা ১৫, ২০ বছর আগে প্রকিউর করা অ্যাসেট, সেটা তার ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্টে ডিসক্লোজ করা ছিল না।

মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দীণ বলেন, এখন নতুন করে সরকার যখনই কার্বাউট করতে গেছে, যেন কোনো অ্যাসেট আর লুকায়িত না থাকে, সেটা করতে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে কি হয়েছে তার ওই যে পুরানো অ্যাসেটগুলো রয়ে গেছে, ওইগুলো সে আলটিমেটলি ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্টে দেখাতে পারছে না চাইলেও। দেখাতে গেলে আমাদের ট্যাক্সের বর্তমান যে আইন আছে, তাতে করে তার পিছনের ৭, ৮, ১০ বছর পর্যন্ত ট্যাক্স ফাইল ওপেন হয়ে যায়, যেটা ব্যবসায়িক জটিলতা তৈরি হয়। সেটাকে কার্বাউট করার জন্য সরকার অনেক আগে থেকেই চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, ২০২০ সাল থেকেই সরকার চেষ্টা করছিল কীভাবে একটা ইনডিমিনিটি দিয়ে এটাকে ফেয়ার পজিশনে নিয়ে আসা যায়। তারই উদ্দেশ্যে সম্ভবত সরকার এটা করেছে। কারণ এটা করাতে এখন যেটা হবে আজ থেকে ১৫, ২০, ৩০ বছর আগে যে অ্যাসেটগুলো তারা দেখাতে পারেনি, এখন তারা এই অ্যাসেটগুলো ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে দেখিয়ে দেবে।

সরকার এটাকে ফেয়ার পজিশনে আনতে চেষ্টা করছে। কর্পোরেট গভার্নেন্স-কে এনসিওর করার চেষ্টা করছে, জবাবদিহিতাকে একটা জায়গায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছে বলেই সরকার এই ইনিশিয়েটিভ নিয়েছে।

কতগুলো প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের সম্পদ রয়েছে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা এই মুহূর্তে বলতে পারবো না। কারণ এ ধরনের ডাটা আমাদের কাছে নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিএবির সাবেক সভাপতি ও কাউন্সিল মেম্বার মো. হুমায়ুন কবির, সহ-সভাপতি এবিএম লুৎফুল হাদী, সাবেক সভাপতি ও কাউন্সিল মেম্বার মো. মনিরুজ্জামান, আইসিএবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্নেহাশীষ বড়ুয়া প্রমুখ।

এমএএস/এমএএইচ/জেআইএম

Read Entire Article