১৬ মাসের ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত ভবিষ্যতে অনুসরণ করতে পারবে

2 hours ago 6

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ১৬ মাসের মাননির্ধারক ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত ভবিষ্যতের যে কোনো সরকার অনুসরণ করতে পারবে।

নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউতের বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এমন মন্তব্য করেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, বিগত ১৫ বছরের ‘সাংবিধানিক বিচ্যুতি’র ফলে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বিচার বিভাগের ওপর ন্যস্ত হয়েছে। সেগুলো, সংবিধানের প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সরকারের আইনিভিত্তিকে সহায়তা প্রদান এবং বিচার বিভাগের স্বায়ত্তশাসন পুনরুদ্ধার।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউত জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশের বিচার বিভাগে গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম প্রত্যক্ষকরণ, অভিজ্ঞতা বিনিময়সহ একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সফর করছেন।

নেপালের প্রধান বিচারপতি শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান। পরদিন সকালে তিনি সুপ্রিম কোর্টে আসেন। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।

সফরকালে নেপালের প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন, বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে চালু হওয়া ‘সুপ্রিম কোর্ট হেল্পলাইন’ কার্যক্রম সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। পরবর্তীতে আপিল বিভাগের ১ নম্বর এজলাসে (প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন এজলাস) অনুষ্ঠিত বিচারকার্য প্রত্যক্ষ করেন।

একইদিন দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পৃথক অনুষ্ঠানে যোগ দেন নেপালের প্রধান বিচারপতি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত একটি কর্মশালায় অংশ নেন।

গত ৩ নভেম্বর নেপালের প্রধান বিচারপতি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মিডিয়া সংক্রান্ত একটি সভায় অংশ নেন। এতে সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন সাংবাদিক অংশ নেন।

সভায় বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির রোডম্যাপের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সংস্কার যাত্রায় গণমাধ্যম কি ভূমিকা পালন করেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। যাতে নেপালের বিচার বিভাগ সংস্কার কাজে এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যায়।

সাংবাদিকদের সঙ্গে সভা শেষে আরেকটি সভায় অংশ নেন তিনি। ওই সভায় বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে দায়িত্বগ্রহণের পর তিনি বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ অনিশ্চিত থাকা সত্ত্বেও সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নে তিনি দিনরাত অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরের ‌‘সাংবিধানিক বিচ্যুতির’ ফলে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বিচার বিভাগের ওপর ন্যস্ত হয়েছে। সেগুলো, সংবিধানের প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সরকারের আইনিভিত্তিকে সহায়তা প্রদান, এবং বিচার বিভাগের স্বায়ত্বশাসন পুনরুদ্ধার।

তিনি উল্লেখ করেন, ঐতিহাসিক রায়, অধ্যাদেশ ও নীতিগত সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানবাদকে পুনরুজ্জীবিত করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত ১৬ মাসের মাননির্ধারক এই ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত ভবিষ্যতের যেকোনো সরকার অনুসরণ করতে পারবে।

পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগীয় নেতৃত্বে এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ‌‘জে-টু-জে কূটনীতি’ শক্তিশালী করার আহ্বান জানান, যাতে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরও সংস্কারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।

এফএইচ/এসএনআর/এমএস

Read Entire Article