২০২৫ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা

6 hours ago 8

বিদেশ ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় ভিসা প্রাপ্তির বিষয়টি একটি বড় সমস্যা। দেশের সীমানা পেরিয়ে অন্য দেশের মাটিতে পা রাখার এই অনুমতির শিথিলতা বিভিন্ন সময়ে কমবেশি হয়ে থাকে। বিশ্ব রাজনীতি ও আন্তঃদেশীয় সম্পর্কের ভিত্তিতে সৃষ্ট এই অবস্থার প্রধান শিকার হন মূলত বিদেশে যাওয়া নাগরিকরাই।

ভিসা প্রক্রিয়ার নানা জটিলতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে তথ্য-প্রযুক্তির যুগেও অনেক ভ্রমণকারীকে ভিসা প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। সেখানে ভিসামুক্ত গন্তব্যগুলো যেকোনো দেশের জন্যই বড় সুখবর। প্রতিবারের মতো এ বছরও পাসপোর্টের মানের ভিত্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্রমের তালিকা প্রকাশ করেছে হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স। এই তালিকায় উঠে এসেছে- একটি দেশের পাসপোর্টের জন্য কতগুলো দেশের ভিসা-শিথিলতা রয়েছে।

তার মধে বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীরা বেশ কয়েকটি দেশে ভিসা ছাড়া, অন-আরাইভাল ভিসা ও ই-ভিসাতে যেতে পারবেন।

২০২৫ সালে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসামুক্ত দেশগুলো : 

পরিপূর্ণভাবে ভিসা-মুক্ত অভিবাসন নীতিতে দেশ ত্যাগ বা বিদেশে প্রবেশকালে কোন ধরনের কাগুজে বা ডিজিটাল অনুমতিপত্র দেখানোর শর্ত থাকে না। ফলে দেশি বা বিদেশি মুদ্রায় ভিসা ফি দেওয়ারও কোনো অনুষঙ্গ নেই। এই কার্যনীতির একমাত্র নথি হিসেবে কাজ করে পাসপোর্টটি।

তবে এই সুবিধা নিয়ে গন্তব্যের দেশটিতে অবস্থান করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া থাকে, যার বিস্তৃতি একেক দেশে একেক রকম।


২০২৪ সালে হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স অনুসারে পৃথিবীর ২২টি দেশ বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকা নাগরিকদের সম্পূর্ণ ভিসা-অব্যহতি সুবিধা দিয়েছিল। কিন্তু এবার এই সংখ্যাটি কমে দাড়িয়েছে ২১।

আসুন দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশের জন্য এই ভিসামুক্ত গন্তব্যের দেশ কোনগুলো

১. ভুটান

২. বার্বাডোস

৩. বাহামাস

৪. ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ

৫. কুক দ্বীপপুঞ্জ

৬. ডমিনিকা

৭. ফিজি

৮. গ্রেনাডা

৯. হাইতি

১০. জ্যামাইকা

১১. কিরিবাতি

১২. মাদাগাস্কার

১৩. মাইক্রোনেশিয়া

১৪. মন্টসেরাট

১৫. নিউ

১৬. রুয়ান্ডা

১৭. সেন্ট কিট্স এবং নেভিস

১৮. সেন্ট ভিন‌্সেন্ট এবং গ্রেনাডাইন্স

১৯.  ভানুয়াতু

২০. ত্রিনিদাদ ও টোবাগো

২১. দ্যা গাম্বিয়া


২০২৪-এর সূচকের পূর্ণাঙ্গ ভিসামুক্ত ক্যাটাগরি থেকে এবার লেসোথো বাদ পড়েছে। দেশটিতে যেতে হলে বাংলাদেশিদের এখন থেকে দেশ ত্যাগের পূর্বেই যথাযথ আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। ক্যাটাগরির অন্য ২১টি দেশের প্রত্যেকটিই অপরিবর্তিত রয়েছে, কোনোটির সঙ্গেই নতুন কোনো দেশের প্রতিস্থাপন হয়নি।

২০২৫ সালে অন-অ্যারাইভাল ভিসায় বাংলাদেশিরা যে দেশগুলোতে যেতে পারবেন 

এই অভিবাসন নীতি অনুসারে বিদেশ গমনকারী গন্তব্যের দেশে প্রবেশের আগ মুহুর্তে ভিসা হাতে পান। বিমানবন্দর, সমুদ্র বন্দর, কিংবা স্থলবন্দর; যেকোনো চেকপয়েন্টে এই কার্যক্রমটি সম্পন্ন করা হয়। এ ধরনের অনুমতি নিয়ে বিদেশে প্রবেশ এবং সেখানে থাকার জন্য সুনির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। এই সময়সীমা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিনামূল্যে দেওয়া হলেও কোনো কোনো দেশে এই ভিসার জন্য ফি রাখা হয়।

২০২৫-এর হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স মতে, বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রে ১৬টি দেশে এই ভিসা-নীতি অনুসরণ করা হবে। দেশগুলোর তালিকা নিম্নরূপ:

১. কম্বোডিয়া 

২. বুরুন্ডি 

৩. বলিভিয়া 

৪. কেপ ভার্দে দ্বীপপুঞ্জ 

৫. কমোরো দ্বীপপুঞ্জ 

৬. জিবুতি 

৭. গিনি-বিসাউ 

৮. মালদ্বীপ 

৯. মৌরিতানিয়া 

১০. মোজাম্বিক 

১১. নেপাল 

১২. সামোয়া 

১৩. সিয়েরা লিওন 

১৪. সোমালিয়া 

১৫. টুভালু 

১৬. তিমুর-লেস্তে 


গত বছর এই সংখ্যাটি ছিল ১৮। এবার এই ক্যাটাগরি থেকে সেশেলস ও টোগো বাদ পড়েছে। সেশেলস এখন থেকে বাংলাদেশিদের জন্য ইটিএ পদ্ধতি অনুসরণ করবে, আর টোগোতে থাকছে ই-ভিসা নীতি।

২০২৫ সালে যেসব দেশে যেতে বাংলাদেশিদের ইটিএ প্রয়োজন হবে
ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন (ইটিএ) হচ্ছে ভ্রমণের জন্য ডিজিটাল ছাড়পত্র, যা সরাসরি পাসপোর্টের সঙ্গে সংযুক্ত করা থাকে। এই অনুমতি ভ্রমণের আগে নিতে হয়, তবে প্রক্রিয়াটির জন্য দূতাবাসে সশরীরে না যেয়ে অনলাইন থেকেই করে নেওয়া যায়। ইটিএ প্রদানকারী প্রত্যেকটি দেশের অভিবাসন ওয়েবসাইটে এই ইলেক্ট্রনিক পরিষেবাটি রয়েছে।

২০২৫ সালে ৩টি দেশে ভ্রমণকালে এই ছাড়পত্র পাওয়া যাবে।

দেশগুলো হলো:

১. শ্রীলঙ্কা

২. কেনিয়া

৩. সেশেলস

বিগত বছরের অন-অ্যারাইভাল তালিকায় থাকা সেশেলস এ বছর যুক্ত হয়েছে ইটিএ ক্যাটাগরিতে।


হেনলি ইনডেক্স অনুযায়ী সম্পূর্ণ ভিসা-অব্যহতি, অন-অ্যারাইভাল ও ইটিএ- এই তিন ভিসা-নীতিকে একত্রে ভিসামুক্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই নিরীখে চলতি বছর বাংলাদেশের জন্য ভিসামুক্ত গন্তব্যের সংখ্যা সর্বমোট ৪০ যা ২০২৪ সালে ছিল ৪২।

এই পরিবর্তনের ফলে হেনলি ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৭ থেকে দাড়িয়েছে ১০০তে। ২০২১ সালে বাংলাদেশ সর্বনিম্ন মাত্রায় পৌঁছেছিল। তারপর থেকে টানা তিন বছর ক্রমশ উন্নয়নের পর আবারও নিম্নগামী হলো বাংলাদেশি পাসপোর্টের মান।

২০২৫ সালে যে দেশগুলো বাংলাদেশিদের ই-ভিসার সুবিধা দিচ্ছে

ইটিএ এবং ইলেক্ট্রনিক বা ই-ভিসা উভয়ের সঙ্গেই অনলাইন পদ্ধতির সম্পৃক্ততা থাকলেও এর মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে। ই-ভিসা মূলত পড়াশোনা, চাকরি বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে দীর্ঘ দিনের জন্য বিদেশ গমনের জন্য করা হয়। অন্য দিকে, ইটিএ’র মূল উদ্দেশ্য থাকে পর্যটন বা ট্রাঞ্জিট; তথা স্বল্প সময়ের জন্য গন্তব্যের দেশটিতে থাকা।

ডিজিটাল পদ্ধতির পরেও ই-ভিসার আবেদন প্রক্রিয়াতে প্রায় ক্ষেত্রে সহায়ক নথির প্রয়োজনীয়তা থাকায় প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। অপরদিকে, ইটিএ’র জন্য খুব বেশি নথির বাধ্যবাধকতা নেই, ফলে প্রক্রিয়া খুব দ্রুত ও সহজ হয়।


২০২৫ যে দেশগুলোতে যেতে বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীদের ই-ভিসা করতে হবে, সেগুলো হলোঃ

১. আজারবাইজান

২. অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা

৩. আলবেনিয়া

৪. বাহরাইন

৫. বেনিন

৬. বতসোয়ানা

৭. ক্যামেরুন

৮. কলম্বিয়া

৯. নিরক্ষীয় গিনি

১০. গিনি

১১. ইথিওপিয়া

১২. গ্যাবন

১৩. জর্জিয়া

১৪. কাজাখস্তান

১৫. কিরগিজস্তান

১৬. মালয়েশিয়া

১৭. মলদোভা

১৮. মায়ানমার

১৯. ওমান

২০. পাকিস্তান

২১. কাতার

২২. সাও টোমে এবং প্রিন্সিপে

২৩. সুরিনাম

২৪. সিরিয়া

২৫. তাজিকিস্তান

২৬. তানজানিয়া

২৭. থাইল্যান্ড

২৮. টোগো

২৯. তুর্কি

৩০. উগান্ডা

৩১. উজবেকিস্তান

৩২. ভিয়েতনাম

৩৩. জাম্বিয়া

৩৪. জিম্বাবুয়ে

Read Entire Article