২১ মাস কমিটিহীন রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ

3 months ago 17

২০২২ সালে এক বছরের জন্য গঠন করা হয়েছিল রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি। নানা বিতর্কের কারণে আট মাসেই সাবিকুল ইসলাম রানা ও জাকির হোসেন অমির সেই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপর থেকে আর নতুন কমিটি হয়নি। অর্থাৎ প্রায় দুই বছর ধরে কমিটি নেই রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের। এতে ঝিমিয়ে পড়েছে ছাত্রলীগের কার্যক্রম। এমনকি পালনও করা হয় না সাংগঠনিক কর্মসূচি। হতাশায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনটির অনেক নেতাকর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন।

রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের তথ্যমতে, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সাকিবুল ইসলাম রানাকে সভাপতি ও জকির হোসেন অমিকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩০ সদস্যের কমিটি করেন তৎকালীন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিন খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এরপরই রানাকে নিয়ে উঠে বিতর্ক।

ছাত্রদলের নেতা থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি বানানোকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা। এরপর কিছুদিন না গড়াতেই মাদক ও নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন রানা। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক অমির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। ব্যাপক সমালোচনার মুখে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীর নেতারা আট মাসের মাথায় এই কমিটি ভেঙে দেন। ২০২২ সালের ২১ অক্টোবর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপর থেকেই নেতৃত্বশূন্য রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ।

২০২৩ সালে ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজশাহী জেলা কমিটি ঘোষণার জন্য জীবন বৃত্তান্ত আহ্বান করেন। ২০২৩ সালের ১০ জুলাই তারা জীবনবৃত্তান্ত চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর কর্মীসভার আয়োজন করে ছাত্রলীগ। পরে সেই কর্মীসভা আর হয়নি। তবে চলতি বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপত্যাশীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় অফিসে মতবিনিময় সভা করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপরই কমিটি ঘোষণা হবে বলে মনে করছিলেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এখনো রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি।

শুধু জেলা কমিটিই নয়, এখানকার উপজেলা কমিটিগুলোও নিষ্ক্রিয়। রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী, বাঘা, পুঠিয়া, বাগমার উপজেলা কমিটি নেই প্রায় দুই বছর ধরে। এছাড়া চারঘাট, পবা, মোহনপুর উপজেলা কমিটি হয় আট বছর আগে। কিন্তু এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। ফলে উপজেলা পর্যায়েও থমকে আছে সাংগঠনিক কার্যক্রম।

রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আমাদের সময়ের অনেক নেতার এখন বয়স নেই। সবশেষ কমিটিরও অনেকেরই এখন বয়স নেই। এই কমিটি দ্রুত দেওয়া দরকার। কারণ এখন কমিটি না থাকার কারণে অনেক সংকট হচ্ছে। কর্মী নেই। নতুন করে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। সংগঠন যারা করেন তাদেরই নেতৃত্বে আসা দরকার।

রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক বলেন, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সংগঠনের ক্ষতি হচ্ছে। এটি একটি বিভাগীয় জেলা। এখানে কমিটি না খাতা অত্যন্ত দুঃখজনক। এখানে কমিটি দেওয়া খুবই জরুরি।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের কর্মী তৈরির কারখানা। এভাবে দুবছর কমিটি না থাকায় আমাদের কর্মী সংকট তৈরি হবে। রাজনৈতিক সংকট দেখা দেবে। এটি সমাধানের জন্য দ্রুত কমিটি গঠন করা দরকার।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবু অনীল কুমার বলেন, তারা আগের মতো প্রাণবন্ত নেই। দায়িত্ব পেলে তারা আরও প্রাণবন্ত হবে। আমি কেন্দ্রে কথা বলেছি। তারা যাতে দ্রুত কমিটি ঘোষণা করেন সেজন্য বলেছি।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমার দ্রুতই এই কমিটি ঘোষণা করবো। আমাদের কাজ চলেছে।

সাখাওয়াত হোসেন/জেডএইচ/জেআইএম

Read Entire Article