৩১ বছর ধরে দশম গ্রেডে এটিইওরা, এবার নবম গ্রেডের দাবি

1 month ago 8

উপজেলা বা থানা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসাররা (এটিইও) প্রায় ৩১ বছর ধরে দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা পেয়ে আসছেন। একই সময়ে প্রধান শিক্ষকরা বেতন স্কেলে ছয় এবং সহকারী শিক্ষকরা পাঁচ ধাপ এগিয়েছেন। অথচ এটিইওদের অবস্থা সেই আগের মতোই রয়েছে।

এটিকে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে অবিলম্বে এটিইও পদটি নবম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছেন ‘বাংলাদেশ সহকারী উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) অ্যাসোসিয়েশন।

শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা। এসময় দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিস্তারিত তুলে ধরেন এটিইওরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্যসচিব আল আমিন হাওলাদার।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১৯৯৪ সালে সংশোধিত নিয়োগবিধি অনুযায়ী এটিইও পদটি দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। দীর্ঘ ৩১ বছর ধরে পদটি দশম গ্রেডেই অপরিবর্তিত রয়েছে, যা তাদের জন্য ‘হতাশাব্যঞ্জক ও বৈষম্যমূলক’ বলে মনে করেন তারা।

আল আমিন হাওলাদার বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদটি তৎকালীন (১৯৯৪) ১৭তম গ্রেডে এবং সহকারী শিক্ষক পদটি ১৮তম গ্রেডে ছিল। প্রধান শিক্ষক পদটি কয়েক দফায় উন্নীত হয়ে ২০১৪ সালে ১১তম গ্রেডে এবং সম্প্রতি উচ্চতর আদালতের রায়ে দশম গ্রেডে উন্নীত করার সব প্রক্রিয়া সমাপ্তের পথে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এটিইওর অনুমোদিত পদসংখ্যা দুই হাজার ৬২৯টি। এ পদের একধাপ ওপরে থাকা উপজেলা বা থানা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের (টিইও) পদসংখ্যা ৫১৬টি। সেই হিসাবে এটিইও পদ টিইও পদের চেয়ে পাঁচগুণেরও বেশি। বর্তমান নিয়োগবিধি অনুযায়ী টিইও পদের ৫০ শতাংশ হিসাবে মাত্র ২৫৮টি পদে অর্থাৎ প্রতি ১০ জনে ১ জন পদোন্নতির সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে অধিকাংশ এটিইওরা দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে একই পদে চাকরি করছেন। অধিকাংশ কর্মকর্তা একই পদে থেকে অবসরেও যাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি দশম গ্রেডে উন্নীত করতে আদালত চূড়ান্ত রায় দেন। সেই আলোকে প্রধান শিক্ষককে দশম গ্রেডে উন্নীতকরণে প্রক্রিয়া চলমান। কিন্তু একজন এটিইওর অধীন প্রায় ৩০ জন দশম গ্রেডভুক্ত প্রধান শিক্ষক এবং ১৬০-২০০ জন ১৩তম গ্রেডভুক্ত সহকারী শিক্ষক থাকেন। এ শিক্ষকদের প্রশাসনিক ও একাডেমিক তত্ত্বাবধান, মেন্টরিং, মনিটরিং, এসিআর ও ছুটি প্রদানকারী কর্মকর্তা হলেন এটিইও। এক্ষেত্রে এটিইও এবং প্রধান শিক্ষক একই গ্রেড হওয়ায় প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এটিইও পদটি অবশ্যই নবম গ্রেডে উন্নীত করা প্রয়োজন।

‘এটিইও পদটি নবম গ্রেডে উন্নীত করা হলে সরকারের তেমন আর্থিক সংশ্লিষ্টতা এবং বাড়তি বরাদ্দের প্রয়োজন হবে না। কারণ এ পদে বর্তমানে কর্মরত এক হাজার ৭২৭ জনের মধ্যে মাত্র ২৬৭ জন কর্মকর্তা ছাড়া বাকি কর্মকর্তারা দশম গ্রেড থেকে উচ্চতর গ্রেড/টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড পেয়ে এরই মধ্যে সপ্তম, অষ্টম ও নবম গ্রেডে বেতন-ভাতা প্রাপ্ত হচ্ছেন। এ পদটি নবম গ্রেডে উন্নীতকরণ হলে শুধু ২৬৭ জনের আর্থিক প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকবে।’

দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে ও যৌক্তিক বিবেচনায় এটিইওদের দশম থেকে নবম গ্রেডে উন্নীত করার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সচিব, জনপ্রশাসন উপদেষ্টা ও সিনিয়র সচিব এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে জোর দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে এটিইও অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মুহাম্মদ মিলন মিয়া, যুগ্ম-আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলামসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এএএইচ/ইএ/জেআইএম

Read Entire Article