৩২ লাখ টাকার সেতুতে ৭ বছরেও উঠতে পারেনি কেউ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উত্তর বড়দল ইউনিয়নের শান্তিপুর নদীর ওপর ৭ বছর আগে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুতে চলাচল তো দূরের কথা এখন পর্যন্ত উঠতে পারেনি কেউ। সেতুতে ওঠার জন্য করা হয়নি মাটি ভরাট। নেই কোনো সংযোগ সড়ক। বহু বছর ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছে আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দাসহ উপজেলায় যাতায়াতকারী লাখ লাখ মানুষ।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের অন্তর্গত বাদাঘাট-চানপুর সড়কে শান্তিপুর নদীর ওপর সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এলজিইডি (সুনামগঞ্জ) হিলিপ প্রকল্প ৩২ লক্ষাধিক টাকা নির্মাণ ব্যয়ে সেতুর দরপত্র আহ্বান করে। নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পায় জামালগঞ্জ উপজেলার পারভেজ এন্টারপ্রাইজ। ২০১৭ সালেই সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী এই তিনটি শুল্ক বন্দর ও সীমান্তে আগত পর্যটকসহ প্রায় ১৫-২০গ্রামের বাসিন্দা এই সড়কে উপজেলা সদরের সঙ্গে যাতায়াত করে থাকে। বর্ষাকালে নদীতে পানি থাকলেও হেমন্তকালে নদীর পানি প্রায় শুকিয়ে যায়। হেমন্তকালে নদী শুকিয়ে গেলে চলাচল করা যায় তবে বর্ষাকালে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব। যার ফলে চলাচলে দুর্ভোগ দেখা দেয়। তাই দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে অচল সেতুটিকে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানায়, ২০১৭ সালে সেতু নির্মাণের পর সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট করা হয়নি। আবার নির্মিত হয়নি সেতুতে ওঠা নামার সংযোগ সড়কও। তাই নদীর ওপর ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটি। আসছে না কোনো কাজেও। সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্প থেকে তৎকালীন উত্তর বড়দল ইউপি চেয়ারম্যান ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন। সেই সময় ইউপি সদস্য আবু তাহের মিয়াকে প্রকল্প সভাপতি করা হলেও তিনি কাজটি শতভাগ করেননি। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
শান্তিপুর এলাকায় গিয়ে কথা হয় স্থানীয় মুহিত মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, নির্মাণের পর থেকে সেতুটি সংযোগ সড়কের জন্য কেউ ব্যবহার করতে পারছে না। অসংখ্য জনপ্রতিনিধিসহ সরকারি লোকজন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন কিন্তু সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করতে কেউ প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এই দুর্ভোগ লাগবের জন্য সেতুটি চলাচলের উপযোগী করতে হলে প্রটেকশন ওয়াল দিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে হবে।
চাঁনপুর গ্রামের বাসিন্দা শামছুল আলম কালবেলাকে বলেন, বর্ষাকালে জরুরী প্রয়োজনে উপজেলা সদরে যেতে হলে এই সড়কে যাতায়াত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সংযোগ সড়কটি স্থাপন করে সেতুটি চলাচলের উপযোগী করা হলে আমরা সহজেই চানপুর-বাদাঘাট সড়ক ব্যবহার করে তাহিরপুর উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারতাম। জনদুর্ভোগ কমে আসত।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) জাহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আমি অল্প কিছু দিন হলো এখানে এসেছি। সেতুটির বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়েছি। সেতুটি চলাচলের উপযোগী করতে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব।