মুসলিম বিশ্বের কঠোর আপত্তির মুখে ভারত, বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশে নিষিদ্ধ করা হয় ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’। ১৯৮৮ সালে রাজীব গান্ধী সরকার ভারতে এই বই বিক্রি নিষিদ্ধ করে। তবে বইটি নতুন করে ভারতের কিছু বইয়ের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে।
এখন বলা হচ্ছে, উপন্যাসটির আমদানি ভারতে নিষিদ্ধ করে তৎকালীন সরকার যে ঘোষণা জারি করেছিল, তার কোনো নথি বর্তমানে পাওয়া যায় না। ভারতের বিশাল আমলাতন্ত্রের কোনো সরকারি সংরক্ষণকেন্দ্রেও সম্প্রতি খোঁজ করেও এ সংক্রান্ত নথি পাওয়া যায়নি।
এমন পরিস্থিতিতে গত মাসে দিল্লির হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে একটি নির্দেশনা জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, সরকার ১৯৮৮ সালের ৫ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞার আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞাটি কার্যকর হয়নি। তাছাড়া ওই ধরনের কোনো ঘোষণাপত্র না পাওয়ায় পুনরায় বইটির বিক্রি শুরু করা ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।
এদিকে, আদালতের এই আদেশের প্রতিবাদ জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া ভারত মজলিশ-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)। বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠনের সঙ্গে মিলে তারা সালমান রুশদির বিতর্কিত বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ ভারতীয় বইয়ের দোকানে ফিরে আসার নিন্দা জানিয়েছে। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বইটির ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের আবেদন জানিয়েছে।
মুম্বাইয়ের সাবেক এআইএমআইএম বিধায়ক, ওয়ারিশ পাঠান, বইটির বিক্রি পুনরায় শুরু হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বইটি প্রায় চার দশক আগে প্রকাশিত হয়েছিল ও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এটি ভারতে আবারও ফিরে এসেছে। প্রকাশের সময় এটি আপত্তিকর বিষয়বস্তুর কারণে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল, যা আমি ভাষায় বর্ণনা করতে পারবো না। এটি শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বেই বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। এমনকি, সালমান রুশদি নিজেও বইটির জন্য সহিংস প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন।
বইটির ফিরে আসাকে উসকানিমূলক কাজ বলে অভিহিত করে ওয়ারিশ পাঠান অতীতের প্রতিবাদগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, মুম্বাইতে মানুষ বইটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল ও কিছু মুসলিম যুবক পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন। এখন দিল্লি হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি, উচ্চতর আদালতে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন করার জন্য। মানুষের বিশ্বাসের বিরুদ্ধে উসকানি রোধ করতে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা আবশ্যক।
সূত্র: দ্য হিন্দু
এসএএইচ