৪ ঘণ্টার বাজারে কোটি টাকার বিক্রি

1 month ago 18

বাজার চলে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। আর এই চার ঘণ্টায় বিক্রি কোটি টাকা। সাতক্ষীরার বাগদা চিংড়ির পোনা (রেণু) বিক্রির বাজারে এ ঘটনা নিয়মিত। বাজারটি সাতক্ষীরা নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থিত। সকাল থেকে শুরু হওয়া এই বাজারে রোদের তেজ বাড়ার আগেই বেচা-বিক্রি শেষ হয়ে যায়। ভরা মৌসুমে বিক্রি বাড়ে আরও কয়েক গুণ।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে বেলা ১১টার মধ্যে কয়েক দফায় কক্সবাজার থেকে চিংড়ির পোনা নিয়ে ট্রাক এসে মার্কেটের সামনে দাঁড়ায়। এ সময় আগে থেকে পোনা ক্রেতারা গাড়ির পাশে ভিড় করেন। ট্রাক থেকে পোনাভর্তি কর্কশিটের বাক্স নামানোর পর পিকআপ, মাহেন্দ্রা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন বাহনে করে সাতক্ষীরা ও খুলনার বিভিন্ন উপজেলায় নেওয়া হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মতর্কার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, সাতক্ষীরায় ৬৫ হাজার ৫৩৬ হেক্টর জমিতে বাগদা চিংড়ির ঘের আছে ৫৪ হাজার ৯৩৫টি। এসব ঘেরে বাগদা চিংড়ি চাষের জন্য ৩২০ থেকে ৩৫০ কোটি পোনার প্রয়োজন হয়। অধিকাংশ পোনা কক্সবাজারের বিভিন্ন হ্যাচারি থেকে আসে। বাকিগুলো প্রাকৃতিকভাবে সুন্দরবন বা অন্য উৎস থেকে উৎপাদন করা হয়।

পোনা ব্যবসায়ী আজমির হোসেন বলেন, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আমাদের বাজার চলে। আমাদের থেকে কেনা এসব পোনা শ্যামনগর, আশাশুনি, দেবহাটা, কালীগঞ্জ, তালা ছাড়াও খুলনার পাইকগাছা ও কয়রার বিভিন্ন ঘেরে চলে যায়। চার ঘণ্টায় বাজারে প্রতিদিন অন্তত এক কোটি টাকার ওপর পোনা বিক্রি হয়। তবে ভরা মৌসুমে পোনার চাহিদা বাড়লে বেচাবিক্রি আরও বাড়ে বলে তিনি জানান।

নিজের ঘেরে চিংড়ি চাষের জন্য কালীগঞ্জ থেকে পোনা নিতে আসেন ঘের ব্যবসায়ী বাবু বিশ্বাস। তিনি জানান, দুই বাক্সে ১০ হাজার ৮০০টি পোনা কিনেছেন। প্রতি হাজার ৩৮৫ টাকা করে। একইভাবে আশাশুনির বালিথা থেকে আসা হারুন অর রশিদ প্রতি হাজার ৪০০ টাকা দরে ২৭ হাজার পোনা কিনেছেন।

সাতক্ষীরা পোনা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে থেকে এই বাজারের শুরু হয়। কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন ৮-১০টি হ্যাচারির ১২ থেকে ১৪টি ট্রাকে পোনা আসে। প্রতি ট্রাকে ২৫ থেকে ২৭ লাখ পোনা থাকে।

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি শেষ দিকে যশোর পর্যন্ত পোনা কার্গো বিমানে আসে। তারপর সেখান থেকে ট্রাকে সাতক্ষীরায় আনা হয়। তখন দুই থেকে তিনগুণ বেশি পোনা আসে। দামও বেশি থাকে। তবে যোগযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হলে পোনাচাষিরা সুফল পাবে। কারণ রাস্তা থেকে পোনার গায়ে আঘাত না পেলে বেশি উৎপাদন হবে।

Read Entire Article