৫ দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন, মেডিকেল অফিসার ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থীরা। এরই মধ্যে দেশের সব মেডিকেল কলেজে তারা ক্লাস বর্জন করেছেন। কর্মবিরতিতে আছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও। তাদের দাবি না মানা হলে সব শিক্ষক ও চিকিৎসককে নিয়ে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে আন্দোলনরত ডা. আতাউর ও ডা. সোহাগ জাগো নিউজকে এসব কথা জানান।
ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিস নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এই আন্দোলন সমন্বয় করা হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে তারা এই দাবি নিয়ে মাঠে নামেন।
দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের মতো রোববার ‘সাধারণ মেডিকেল শিক্ষার্থী’র ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনেও বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
তাদের ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সব ধরনের ক্লাস বর্জন করেছে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও কর্মবিরতিতে আছেন। এই কর্মসূচি আগামীকালও চলবে। এর বাইরেও আগামীকাল (২৫ ফেব্রুয়ারি) ওয়াক ফর জাস্টিস কর্মসূচি পালন করবে তারা। শহীদ মিনার থেকে শুরু করে এই কর্মসূচি হাইকোর্টে গিয়ে শেষ হবে।
৫ দাবি হলো
১. ডাক্তার পদবি ব্যবহার সংক্রান্ত রিটটি প্রত্যাহার। মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করা। যা ২০১০ সালে গেল সরকার দিয়ে গেছে।
২. উন্নত বিশ্বের মান অনুযায়ী ওটিসি ড্রাগ আপডেট করা। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে ওষুধ ক্রয়-বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা।
৩. স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসক সংকট নিরসনে দ্রুত শূন্যপদে ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ এবং আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠনপূর্বক ৬ষ্ঠ গ্রেডে চাকরি প্রবেশপথ তৈরি। প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ করে চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখা। চিকিৎসকদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪-এ উন্নীত করা।
৪. বেকার তৈরির কারখানা সব ম্যাটস প্রতিষ্ঠান এবং মানহীন মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা। তবে এরই মধ্যে শিক্ষাধীন ম্যাটস শিক্ষার্থী এবং ডিএমএফ গণের প্যারামেডিকস হিসেবে পদায়নের ব্যবস্থা করা। এছাড়াও SACMO পদবি বাতিল করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদবি ব্যবহার চালু। এটি ডাক্তার শব্দের সমার্থক হিসেবে জনগণকে ধাঁধায় ফেলে দেয়।
৫. চিকিৎসকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তায় চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও দ্রুত বাস্তবায়ন করা। এ ক্ষেত্রে দ্রষ্টব্য যে ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ডাক্তার সমাজের প্রতিবাদের মুখে ৭ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। যা আজ ৭ মাস পেরিয়েও কোনো আলোর মুখ দেখেনি।
এদিকে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে দশম গ্রেডে শূন্য পদে নিয়োগ, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ তৈরিসহ চার দফা দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ করেন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টস ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা। সরকারের আশ্বাসে তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রয়েছে।
এসইউজে/এমআইএইচএস/এমএস