হত্যাকাণ্ডসহ পৃথক পাঁচ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জামিন চেয়ে তার করা পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার ও বিচারপতি মো. সাইফুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারির আদেশ দেন।
আদালতে চিন্ময় দাসের পক্ষে আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজিব ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হুমায়ূন তামিম।
এর আগে পৃথক পাঁচ মামলায় অধস্তন আদালতে বিফল হয়ে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। আবেদনগুলোর ওপর এ দিন শুনানি হয়।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রানজিব জানান, পৃথক পাঁচ মামলায় জামিন চাওয়া হয়। আদালত শুধু রুল দিয়েছেন।
জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করে গত ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পর তাকে ওই পাঁচ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলার এজাহারে তার নাম ছিল না। চিন্ময় দাস অসুস্থ, দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন- এসব যুক্তিতে জামিন চাওয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সেটি শুনানি হয়।
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরসহ পৃথক পাঁচ মামলায় চিন্ময় দাসের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয় বলে জানান তার আইনজীবী।
এর আগে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ মে চিন্ময় দাসকে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় ভার্চ্যুয়াল শুনানি শেষে গ্রেফতার দেখান আদালত। পরে অন্য মামলাগুলোয় গ্রেফতার দেখানো হয়।
জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের মামলায় গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ হত্যার ঘটনায় আইনজীবীর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়।
চিন্ময় দাসের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, পৃথক পাঁচ মামলায় চিন্ময় দাসকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় গত বছরের ৩১ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ওই মামলা করেন।
পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
এফএইচ/এনএইচআর/জিকেএস