৫৩ বছরেও কথা রাখেনি কেউ

6 days ago 8
স্বাধীনতার ৫৩টি বছর কেটে গেছে। জনপ্রতিনিধিরা এসেছেন, প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সেতু করে দেবেন। কথা দিয়ে ভোট আদায় করে নিলেও ৫৩ বছরে কেউ কথা রাখেনি।  নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে এঁকে বেকে পার হতে হতে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ও বহুলী ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের মানুষ।   এলাকার তিনটি প্রজন্ম স্বপ্ন দেখে এসেছে ইছামতি নদীর সরাইচন্ডী এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ হবে। বার বার জনপ্রতিনিধিরা এসেছেন, এলাকাবাসীকে স্বপ্নও দেখিয়েছেন। ৫৩ বছর ধরে দফায় দফায় পাওয়া প্রতিশ্রুতিতে আশার স্বপ্ন বুনেছে এ অঞ্চলের কৃষক, শ্রমিক, জনতা। সম্প্রতি সরেজমিনে সরাইচন্ডী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করছে। তবে পণ্যবাহী কোনো যানবাহন যাতায়াত করতে পারছে না। বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সাইকেল বা মোটরসাইকেল পার হলেও তিন চাকার গাড়ি চলে না। বর্ষা মৌসুমে নৌকাযোগে ইছামতি পার হতে হয়। আর শুষ্ক মৌসুমে স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়।  স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সরাইচন্ডি ঘাট দিয়ে বহুলী ইউনিয়নের সরাইচন্ডী, চর পদুমপাল, মাছুয়াকান্দি, রাজাপুর, রহিমপুর, ডুমুর ইছা, চাঁদপাল, আলমপুর, শিয়ালকোল ইউনিয়নের চন্ডিদাসগাঁতী, জোয়ালভাঙা, বহুতী, ছোট হাম কুড়িয়া, শিলন্দা ও ধুকুরিয়াসহ অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ সরাইচন্ডী ঘাট দিয়ে যাতায়াত করে। সরাইচন্ডী এলাকার ইছামতি নদীর দুই পারেই রয়েছে পাকা সড়ক। কিন্তু নদীতে সেতু না থাকায় কৃষিপণ্য, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।  তারা জানান, এটি কৃষি প্রধান এলাকা। এখানে প্রচুর শীতকালীন সবজির আবাদ হয়। কিন্তু এসব কৃষিপণ্য শহরে সরবরাহ করা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে। ফলে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক। অপরদিকে নদীর দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে স্কুল-কলেজ। প্রতিদিনই এই নদী পার হয়েই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয় হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে। সেতুর অভাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। গর্ভবতীসহ মুমূর্ষু রোগীকে সময় মতো হাসপাতালে নিতে না পারায় অনেকে মারা যাচ্ছে। এমন নানান দুর্ভোগ নিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করলেও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি নেই অবহেলিত কৃষি প্রধান এলাকাটার দিকে। ২০০১ সাল থেকে শুরু করে ২০২৩ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে সবুজ আলী নামে এক যুবক বলেন, ওনারা এসেছেন, সেতু নির্মাণে কথাও দিয়েছেন। কিন্তু সেই কথা তারা রাখেননি।  এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আমি যখন এখানে যোগ দিই, তখনই শুনেছি সরাইচন্ডী এলাকায় ইছামতি নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য ডিজাইন প্রস্তুত হয়েছে। কিন্তু খোঁজখবর নিয়ে দেখলাম এখন পর্যন্ত ওই সেতুটি নিয়ে কোনো ধরনের প্রস্তাবনাও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দেওয়া হয়নি। তবে জনস্বার্থে ব্রিজটি নির্মাণের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত অবহিত করা হবে।
Read Entire Article