‘বাপ-চাচা সবাইকে মরতে দেখেছি। কিন্তু জীবনেও বন্যা দেখিনি। গোমতীর পানি আমাদের ভাসিয়ে দিয়েছে। ঘরের কোনো কিছুই বাঁচানো গেলো না। আমাকেও স্রোতে ট্রেনে নিয়ে গিয়েছিল। বাড়ির নাতিরা দেখে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।’
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে বুড়িচংয়ের ইছাপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে জাগো নিউজকে এসব কথা বলছিলেন ৮০ বছরের বৃদ্ধা জামিলা খাতুন।
তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকে গ্রামে বিদ্যুত ছিল না। চার্জার লাইটেও চার্জ শেষ। অন্ধকার পুরো ঘর। কোনোমতে জীবন নিয়ে সবাই বাহির হয়েছি। ঘরে থাকা মাল-ছামানা কিছুই বের করতে পারিনি। একটি মাটির ঘর রয়েছে সেটাও ভেঙে গেছে। নবীজির দোয়ায় সবাইকে আল্লাহ ভাল রাখুক।’
জামিলা খাতুন আরও বলেন, যেভাবে গ্রামে পানি ঢুকছে মনে হয় সব সাগর হয়ে যাবে। স্কুলে থাকতে হবে কোনোদিন কল্পনাও করিনি। এখানে কয়দিন থাকবো সেটাও জানি না।
এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হঠাৎ করে ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া গ্রামের অংশে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে তীব্র স্রোতে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। রাতেই ইছাপুরাসহ আশপাশে কয়েকটি গ্রাম কোমরপানিতে তলিয়ে যায়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে শতশত মানুষ। সকাল থেকে শুরু হয় উদ্ধার কার্যক্রম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পানির পরিমাণও বাড়ছে।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার বলেন, পুরো বুড়িচংই পানির নিচে। প্রবল স্রোতে পানি প্রবেশ করায় প্রতিনিয়ত পানির উচ্চতা বেড়েই চলেছে। পানিবন্দিদের মাঝে সরকারিভাবে শুকনো খাবার, চাল এবং নগদ অর্থ বিতরণ করা হচ্ছে।
জাহিদ পাটোয়ারী/এফএ/এমএস